ব্যাংকের কিছু বিষয়ে ৯ মাসে অন্তর্বর্তীকালীন নিরীক্ষা হবে

বাংলাদেশ ব্যাংকছবি: সংগৃহীত

এখন থেকে দেশের ব্যাংকগুলোর ৯ মাসের কার্যক্রমের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিরীক্ষা হবে। অন্তর্বর্তীকালীন এ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিলের জন্য। ব্যাংকের বার্ষিক নিরীক্ষার জন্য নিয়োগ করা নিরীক্ষকেরা এই প্রতিবেদন তৈরি করবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার ব্যাংকের বহির্নিরীক্ষক নিয়োগ-সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে আর্থিক বছরের নবম মাসভিত্তিক অন্তর্বর্তীকালীন এ নিরীক্ষার কথা বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান একটি ব্যাংকে টানা তিন বছরের বেশি নিরীক্ষা করতে পারবে না। আর একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুই দফায় তিন বছর করে ছয় বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো ব্যক্তি, ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো এজেন্ট বা প্রতিনিধি বা ব্যাংকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি নিরীক্ষক বা নিরীক্ষা দলের সদস্য হতে পারবেন না।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের ৯ মাসভিত্তিক যে নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করবে, সেখানে ঋণ শ্রেণীকরণ ও ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিংয়ের অনিয়ম, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া তথ্য-উপাত্ত বা নথিপত্রে প্রাপ্ত অনিয়ম, খেলাপি ঋণের তথ্য যথাসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো বা সিআইবিতে দাখিল করা হয়েছে কি না, সম্পদ-বিনিয়োগের শ্রেণীকরণ ও এর বিপরীতে প্রভিশনিংয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম থাকলে তা চিহ্নিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন জমা দেবে।

অন্তর্বর্তীকালীন, নিয়মিত প্রতিবেদনের পাশাপাশি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারবে। কোন ক্ষেত্রে এই বিশেষ প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে, তা-ও নীতিমালায় সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনো ধারা লঙ্ঘিত হলে, অসততা ও প্রতারণা-সংক্রান্ত কারণে কোনো ফৌজদারি অপরাধ ঘটলে, ব্যাংকের সংরক্ষিত মূলধন ওই ব্যাংকের আবশ্যক মূলধনের ৫০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে, পাওনাদারের পাওনা পরিশোধের নিশ্চয়তা বিঘ্নিত হলে, কোনো গুরুতর আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ঘটলে বা পাওনাদারের পাওনা মেটানোর মতো ব্যাংকের সম্পদ যথেষ্ট কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হলে বিশেষ প্রতিবেদনের মাধ্যমে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন ও বিশেষ প্রতিবেদনের পাশাপাশি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা প্রতিবেদন, চূড়ান্ত প্রতিবেদনও তৈরি করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যেসব ব্যাংকের হিসাব বছর জুলাই থেকে শুরু, তাদের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।