বাজারদর
ডিম-রুটি এখন আরও দামি
ডিমের দাম হালিতে আরও ৫ টাকা বাড়ল। আটার দাম বাড়াচ্ছে কোম্পানিগুলো।
টিসিবির হিসাবে এক সপ্তাহে চালের দাম প্রতি কেজি ২-৫ টাকা ও আটা ৫ টাকা বেড়েছে।
ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে প্রতি লিটার ৫ থেকে ১০ টাকা।
চিনিও প্রতি কেজি ৮ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
একটি ডিম, দুটি রুটি ও একটু ভাজি দিয়ে যাঁরা সকালের নাশতা সারেন, তাঁদের ব্যয় আবার বাড়ল। ডিমের দাম হালিপ্রতি আরও পাঁচ টাকা বেড়েছে। আর প্যাকেটজাত আটার দাম প্রতি কেজি পাঁচ থেকে ছয় টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।
বাজারে এই মূল্যবৃদ্ধি শুধু ডিম ও আটায় নয়, ৫ আগস্ট জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর প্রায় সবকিছুর দামই বাড়ছিল। সংসারের ব্যয়ের চাপের মধ্যে ডিম-আটার বাজারে অস্বস্তি আরও বাড়ল।
ঢাকার বাজারে গত শুক্রবার ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ৪৭ থেকে ৫০ টাকা। গতকাল সোমবার একই ডিম বিক্রি হয় প্রতি হালি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। গতকাল কারওয়ান বাজারের মতো বড় বাজারের ডিমের দোকানেই শুধু ৫০ টাকা হালিতে ডিম বিক্রি হয়। পাড়ার খুচরা মুদিদোকানে ডিম কিনতে গেলে হালি ৫৫ টাকার নিচে পাওয়া যায়নি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকা বলছে, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের হালিপ্রতি দর ছিল ৪০ থেকে ৪২ টাকা। গত রোববার তা ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে ২৮ শতাংশ।
পোলট্রি খাবারের দাম বাড়তি। বেড়েছে পরিবহন খরচ। ডিমের উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ কম। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেচাকেনাও তিন ভাগের এক ভাগ কমে গেছে।’লিটন আহমেদ, রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা
ফার্মের মুরগির সাদা ডিম এত দিন বাদামি ডিমের চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি হতো। এখন দর সমান।
শুধু ফার্মের মুরগির ডিম নয়, বেড়েছে দেশি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দামও। বাজারে এখন দেশি মুরগি ও হাঁসের এক ডজন (১২টি) ডিম ২০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। এক হালি কিনতে গেলে বিক্রেতারা দর চাচ্ছেন ৭০ টাকা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি ডিম বিক্রেতা লিটন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, পোলট্রি খাবারের দাম বাড়তি। বেড়েছে পরিবহন খরচ। ডিমের উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ কম। সব মিলিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বেচাকেনাও তিন ভাগের এক ভাগ কমে গেছে।’
ঢাকার মগবাজার, কাঁঠালবাগান ও কারওয়ান বাজার ঘুরে গতকাল দেখা যায়, ব্রয়লার ও সোনালি জাতের মুরগির দাম আরও বেড়েছে। খুচরা দোকানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিতে ১০ টাকা বেশি।
বাজারে মুরগি সরবরাহে ঘাটতি আছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর হাঁস-মুরগি বাজারজাতকরণ সমবায় সমিতির সদস্য পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগেও আমাদের আড়তে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজারের মতো সোনালি ও দেশি মুরগি বিক্রি হতো। দাম বাড়ার পর এখন মুরগি আসছে ৫ হাজারের মতো। বিক্রিও কম।’
দেশের আটা বিপণনকারী কোম্পানিগুলো গত জুলাই মাসে আটার দাম কমিয়েছিল। দুই কেজির প্যাকেটের দর নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০২ থেকে ১০৪ টাকা। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোম্পানিগুলো দুই কেজির প্যাকেটের দাম ১১২-১১৫ টাকা নির্ধারণ করে বাজারে ছাড়ছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়ে যাওয়া এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নকে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে তুলে ধরছে কোম্পানিগুলো।
টিসিবি বলছে, গত রোববার পর্যন্ত এক সপ্তাহে চালের দাম প্রতি কেজি ২ থেকে ৫ টাকা, খোলা আটা ৫ টাকা, খোলা ময়দা ২ থেকে ৫ টাকা, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার ৫ থেকে ১০ টাকা এবং চিনির দাম প্রতি কেজি ৮ টাকা বেড়েছে।