সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেলেন মোহাম্মদ জয়নুল বারী
সরকার তিন বছরের জন্য সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারীকে। আজ বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মোহাম্মদ জয়নুল বারী গত বৃহস্পতিবার আইডিআরএ থেকে পদত্যাগ করেন।
সাবেক সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারীকে ২০২২ সালের ১৫ জুন আইডিআরএ চেয়ারম্যান পদে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছিল সরকার। তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ১৪ জুন। বিমা খাতে বলিষ্ঠ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় তিনি প্রভাবশালী কিছু বিমা কোম্পানির মালিকপক্ষের রোষানলে পড়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ঠিক এক বছর আগে তিন বছরের জন্য সাধারণ বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ পেয়েছিলেন সাবেক সচিব দুলাল কৃষ্ণ সাহা। তিনি আগের সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পূর্ণ সচিব ছিলেন। পরে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে ২০২২ সালের আগস্টে অবসরে যান। তিন দিন আগে ৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ বীমা করপোরেশন থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।
এর আগে ২০ মে ২০২৪ তারিখ সকালে সাধারণ বীমা করপোরেশনসহ সব নন-লাইফ বিমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ।
দেশে ৪৭টি সাধারণ বীমা (নন-লাইফ) বিমা কোম্পানি রয়েছে। এগুলোর কাছে সাধারণ বীমা করপোরেশনের পুনর্বিমার প্রিমিয়াম পাওনা ও বকেয়া পুনর্বিমা দাবি আছে। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার পর গত জুনে আইডিআরএ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলো হলো বিমা আইন, বিধি, প্রবিধান, প্রজ্ঞাপন অনুসরণপূর্বক বিমা/পুনর্বিমা কার্যক্রম পরিচালনা করা; চুক্তিবদ্ধ বিমাকারীর পুনর্বিমা প্রিমিয়াম আদায় ও পুনর্বিমা দাবি নিষ্পত্তির জন্য চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে নীতিমালা তৈরি; পুনর্বিমা দাবির জন্য সাধারণ বীমা করপোরেশন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা তৈরি; ৯০ দিনের মধ্যে বিমা দাবি নিষ্পত্তি করা; ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুনর্বিমাসংক্রান্ত দেনা–পাওনার বকেয়া প্রিমিয়াম ও বকেয়া বিমা দাবির হিসাব চূড়ান্ত করা ইত্যাদি।
আইডিআরএ চেয়ারম্যান হিসেবে সাধারণ বীমা করপোরেশনের জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মোহাম্মদ জয়নুল বারী, করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে সেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন তাঁর ওপরই পড়ল।
যেকোনো ধরনের স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি, যা সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে কিংবা সংরক্ষণে আছে এবং যার রক্ষণাবেক্ষণে আইনগত দায়িত্ব সরকারের, সেগুলো হচ্ছে সরকারি সম্পত্তি। এ ছাড়া সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো কোম্পানি, খামার, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, উদ্যোগ বা অন্য কোনো স্থাপনা, যেগুলোতে সরকার বা সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা আছে বা আর্থিক সংশ্লিষ্টতা আছে, সেগুলোও সরকারি সম্পত্তি। নিয়ম থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান করপোরেশনের সঙ্গে এসব সম্পত্তির বিমা করে না। এ ছাড়া এক বছর আগের হিসাবে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর কাছে সাধারণ বীমা করপোরেশনের বিমা প্রিমিয়াম বাবদ পাওনা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।