সঞ্চয়পত্র গ্রাহকদের কর প্রত্যয়নপত্র নিতে বলছে সঞ্চয় অধিদপ্তর
সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের জন্য কর প্রত্যয়নপত্র সব সময়ই ছিল। কারণ, এ প্রত্যয়নপত্র আয়কর রিটার্নের সময় দাখিল করতে হয়। এবার জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর গ্রাহকদের প্রত্যয়নপত্র নিতে ব্যাপক উৎসাহ দিচ্ছে। তবে কম টাকা বিনিয়োগ করা গ্রাহকেরা এতে করজালের আওতায় আসতে পারেন। কারণ, করযোগ্য আয় না থাকলেও তাঁদের এখন আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
২৯ জুন এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বলেছে, ২০২১–২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে অর্জিত মুনাফা থেকে যে উৎসে কর কাটা হয়েছে, তার প্রত্যয়নপত্র সঞ্চয় অফিস থেকে দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া কেউ চাইলে ফোন, ই–মেইল ও হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেও সঞ্চয় অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিষয়ে সঞ্চয় অধিদপ্তর এবার এতটাই উৎসাহী যে এর জন্য ১ ও ২ জুলাই (ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার) সঞ্চয় অফিস খোলা রাখা হয়েছিল।
রেজাউল করিম নামের একজন গ্রাহক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বার্ষিক আয় কখনোই তিন লাখ টাকা ছিল না। সঞ্চয়পত্রে তিনি চার লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কোনো কর কাটার কথা না থাকলেও তাঁর কাছ থেকে কর কাটা হচ্ছে। এখন আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে ভেবে ভয় পাচ্ছেন তিনি।
সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের বিনিয়োগের আকার অনুযায়ী করের হার নির্ধারণ করা আছে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের মুনাফার বিপরীতে কর নেই। তা সত্ত্বেও মুনাফা তুলতে গেলে সরকার সবার কাছ থেকেই উৎসে কর নেয়, যদিও পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে কাউকে কর দিতে হবে না বলে বলা আছে।
বর্তমান নিয়মে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের বিপরীতে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) লাগে না; বাস্তবে যদিও টিআইএন ছাড়া বিনিয়োগই করা যায় না। নতুন অর্থবছরে, অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে নিয়ম আরও কঠিন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দিতে হবে।
করমুক্ত আয়সীমা বর্তমানে তিন লাখ টাকা। সঞ্চয়পত্রের যে গ্রাহকের অন্য কোনো আয় নেই এবং যাঁর সঞ্চয়পত্রের মুনাফাও করমুক্ত আয়সীমার কম, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে কর কেটে নিলেও সরকার তা ফেরত দেবে।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় সঞ্চয় অফিস থেকে নেওয়া প্রত্যয়নপত্র জমা দিলেই গ্রাহকের করের পরিমাণ নির্ধারিত হয়ে যাবে। গ্রাহকের পক্ষে প্রত্যয়নপত্র নেওয়ার কাজ সহজ করা হলো এবার।
২০২১–২২ অর্থবছরের রিটার্ন দাখিলের কাজ ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী অক্টোবর বা নভেম্বর পর্যন্ত।