যে কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যবসায়ী নেতা এ কে আজাদ
নির্বাচিত হলে ফরিদপুরের মানুষের কর্মসংস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ ব্যবসায়ী এ কে আজাদ। ব্যবসায়ীদের প্রধান সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক এই সভাপতি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছেন।
এ কে আজাদ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। ক্ষমতাসীন এই দলের পক্ষ থেকে ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে শামীম হককে। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন ১১ জন।
গতকাল সোমবার রাতে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকার বাসভবনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়ে এ কে আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ চায়, তিনি যেন নির্বাচন করেন।
এ কে আজাদ আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের যে ধারা চলেছে, তা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়েই তিনি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, ফরিদপুরের এই আসন থেকে নির্বাচিত হলে তিনি শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে পারবেন।
শুধু বাংলাদেশ নয়, হা-মীম গ্রুপ পুরো বিশ্বেই অন্যতম বড় তৈরি পোশাক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। নামজাদা বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে হা-মীম গ্রুপের পোশাক কারখানাগুলো। তৈরি পোশাক ছাড়াও চা, পাট, পরিবহন ও গণমাধ্যমে বিনিয়োগ আছে এই গ্রুপের। সব মিলিয়ে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ হা-মীম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোয় কাজ করেন।
এ কে আজাদ বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হলে তাঁর অন্যতম কাজ হবে ফরিদপুরে একটি শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা। ১৯৬০-এর দশকে ফরিদপুরে পাট শিল্প গড়ে উঠেছিল, যা এখন অনেকটা বিলুপ্তির পথে। তবে পদ্মা সেতু নির্মাণের পর ফরিদপুরে শিল্পকলকারখানা গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার লক্ষ্য, ভোলার গ্যাস ফরিদপুরে নিয়ে এসে একটি শিল্প এলাকা গড়ে তোলা, যাতে মানুষের কর্মসংস্থান করা যায়।’
এ কে আজাদ বলেন, ফরিদপুরে শিক্ষার মান ভালো না হওয়ার কারণে তরুণদের চাকরি পেতে সমস্যা হয়। তাই শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য তিনি কাজ করবেন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা ও ওষুধপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। পাশাপাশি পদ্মা নদীর অন্য পাড়ে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সুবিধা দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার কাজ ত্বরান্বিত করা হবে।
এ কে আজাদ আরও বলেন, একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি ইতিমধ্যেই ফরিদপুরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। এ ছাড়া হা-মীম ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। আমার লক্ষ্য, তরুণদের ট্রেনিং দিয়ে ঢাকায় নিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা।’
ভবিষ্যতে নির্বাচনী এলাকার ১২টি ইউনিয়নের সব’ কটিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে বলে জানান এ কে আজাদ। তিনি বলেন, ‘আমার ১ নম্বর অগ্রাধিকার কর্মসংস্থান। সাধারণ কোনো কর্মসংস্থান নয়, বরং প্রশিক্ষণ দিয়ে তারপর কর্মসংস্থান।’ তিনি জানান, হা-মীম গ্রুপে যে ৭৫ হাজার কর্মী কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ফরিদপুর অঞ্চলের।