দেশসেরা করদাতা যে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
ব্যক্তি পর্যায়ের করদাতা ৭৬ জন, কোম্পানি পর্যায়ের ৫৪ প্রতিষ্ঠান, অন্যান্য শ্রেণিতে রয়েছে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।
সেরা করদাতারা পাবেন সম্মাননা ও কর কার্ড।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ২০২২-২৩ করবর্ষে সেরা করদাতা হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে ১৪১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স কার্ড বা কর কার্ড দেবে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যক্তি পর্যায়ের ৭৬ করদাতা, কোম্পানি পর্যায়ের ৫৪ প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য শ্রেণিতে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন শ্রেণিতে জাতীয়ভাবে সেরা করদাতাদের তালিকা প্রকাশ করেছে এনবিআর।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সেরা করদাতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা ও কর কার্ড দেওয়া হবে। আর কর কার্ডধারী সেরা করদাতারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও অগ্রাধিকার পাবেন। এই কর কার্ড হবে এক বছরের জন্য।
কোন শ্রেণিতে কারা সেরা করদাতা
সিনিয়র সিটিজেন বা জ্যেষ্ঠ নাগরিক: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী; ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক খাজা তাজমহল, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির।
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা: এ শ্রেণিতে সেরা করদাতা হয়েছেন এ মতিন চৌধুরী, মো. আমজাদ হোসেন, মো. নাসির উদ্দিন মৃধা, মো. জয়নাল আবেদীন ও আবু সালেহ্ মোহাম্মদ নাসিম।
প্রতিবন্ধী: এ শ্রেণিতে সেরা করদাতা হলেন ঢাকার আকরাম মাহমুদ, সিলেটের চিকিৎসক মো. মামুনুর রশিদ ও কুষ্টিয়ার মো. শাহজামাল।
মহিলা: এ শ্রেণিতে তালিকায় প্রথমে রয়েছেন আনোয়ারা হোসেন, দ্বিতীয় ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহনাজ রহমান, রাজশাহী অঞ্চলের করদাতা নিলুফার ফেরদৌস, ঢাকার মিতুলী মাহবুব ও চিকিৎসক শায়লা আফ্রিন খন্দকার।
তরুণ: এ শ্রেণিতে শীর্ষে রয়েছেন আহমেদ আরিফ বিল্লাহ। তারপর রয়েছেন যথাক্রমে মো. শাহেদ শাহরিয়ার, সারদিন রহমান, ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক সদ্য প্রয়াত নাসিরুদ্দিন আকতার রশীদ ও বগুড়ার করদাতা রাকেশ কুমার।
ব্যবসায়ী: এ শ্রেণিতে প্রতিবছরের মতো এবারও শীর্ষে হাকিমপুরী জর্দার স্বত্বাধিকারী মো. কাউছ মিয়া। এরপর রয়েছেন গাজী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গাজী গোলাম মুর্তজা, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম ও চেয়ারম্যান এস এম শাসছুল আলম এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
বেতনভোগী: এ শ্রেণির সেরা করদাতাদের পাঁচজনই একই পরিবারের। তাঁরা হলেন ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল পরিবারের মোহাম্মদ ইউসুফ, রুবাইয়াৎ ফারজানা হোসেন, হোসনে আরা হোসেন, লায়লা হোসেন এবং এম এ হায়দার হোসেন।
চিকিৎসক: জাহাঙ্গীর কবির, এ কে এম ফজলুল হক, এন এ এম মোমেনুজ্জামান, প্রাণ গোপাল দত্ত এবং লুৎফুল লতিফ চৌধুরী।
সাংবাদিক: এ শ্রেণিতে রয়েছেন চ্যানেল আইয়ের এমডি ফরিদুর রেজা, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, চট্টগ্রামের দৈনিক আজাদীর সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেক এবং চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ।
আইনজীবী: এ শ্রেণিতে সেরা করদাতা হিসেবে রয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, আহসানুল করিম, তৌফিকা আফতাব ও কাজী মোহাম্মদ তানজীবুল আলম।
প্রকৌশলী: এ শ্রেণিতে শীর্ষে রয়েছেন মো. আতিকুর রহমান। এরপর রয়েছেন দ্য স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (শেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ এম জহিরুল হক।
স্থপতি: মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ, মো. রফিক আজম ও খান মোহাম্মদ মুস্তাফা খালীদ।
হিসাববিদ (অ্যাকাউনট্যান্ট): এ শ্রেণিতে সেরা করদাতা হয়েছেন মোহাম্মদ ফারুক, মাশুক আহমদ ও স্নেহাশীষ বড়ুয়া।
নতুন করদাতা: এ শ্রেণিতে রয়েছেন সাতজন। তাঁরা হলেন রায়েন মাইকেল অট, মো. আলী নুর, মো. রফিকুল ইসলাম, জারা জেরিন জামান, শাহ আলম উদ্দীন, আনতারা জাইমা ও মেহাম্মদ আমিনুল হক।
খেলোয়াড়: এ শ্রেণির সেরা করদাতার তিনজনই ক্রিকেটার। তাঁরা হলেন সাকিব আল হাসান, মো. মাহমুদ উল্লাহ ও তামিম ইকবাল খান।
অভিনেতা-অভিনেত্রী: মাহফুজ আহমেদ, ফরিদা আক্তার ববিতা ও মো. সিয়াম আহমেদ।
শিল্পী (গায়ক-গায়িকা): তাহসান রহমান খান, এস ডি রুবেল ও মমতাজ বেগম।
অন্যান্য: এ শ্রেণিতে রয়েছেন পলমল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাফিস সিকদার, রাকিন সিটি ডেভেলপমেন্টের পরিচালক এস এ কে একরামুজ্জামান ও মো. মনির হোসেন।
প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে যারা কর কার্ড পাবে
ব্যাংক: ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও ইস্টার্ণ ব্যাংক।
অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান: ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড এবং ডিবিএইচ ফাইন্যান্স।
টেলিকমিউনিকেশন: গ্রামীণফোন।
প্রকৌশল: বিএসআরএম স্টিলস, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস (বিএসআরএম) এবং বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি।
খাদ্য ও আনুষঙ্গিক: নেস্লে বাংলাদেশ, প্রাণ ডেইরি ও অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
জ্বালানি: তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন, শেভরন বাংলাদেশ ব্লক থার্টিন অ্যান্ড ফর্টিন এবং পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি।
পাটশিল্প: আকিজ জুট মিলস, আইয়ান জুট মিলস ও পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ।
স্পিনিং ও টেক্সটাইল: স্কয়ার টেক্সটাইলস, কোটস বাংলাদেশ, বাদশা টেক্সটাইলস, এন জেড টেক্সটাইল, কামাল ইয়ার্ন, এ সি এস টেক্সটাইলস এবং ফখরুদ্দীন টেক্সটাইল মিলস।
ওষুধ ও রসায়ন: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস।
প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া: এ শ্রেণিতে শীর্ষে রয়েছে প্রথম আলোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াস্টার লিমিটেড, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড, সময় মিডিয়া ও টাইমস মিডিয়া লিমিটেড।
আবাসন: স্বদেশ প্রপার্টিজ, শান্তা হোল্ডিংস এবং এডব্লিউআর ডেভেলপমেন্টস।
তৈরি পোশাক: ইয়াংওয়ান হাইটেক স্পোর্টসওয়্যার, স্কয়ার ফ্যাশনস, রিফাত গার্মেন্টস, তিতাস স্পোর্টসওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনিভার্সেল জিনস, নাইস ডেনিম মিলস ও ফকির নিটওয়্যার।
চামড়াশিল্প: বাটা শু কোম্পানি, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার এবং অ্যালায়েন্স লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার।
অন্যান্য: ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি, আমেরিকান লাইফ ইনস্যুরেন্স, সাধারণ বীমা করপোরেশন এবং ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি।
এ ছাড়া অন্যান্য করদাতা পর্যায়ে মেসার্স এস এন করপোরেশন, মেসার্স মো. জামিল ইকবাল, ওয়ালটন প্লাজা, মেসার্স ছালেহ আহাম্মদ, সেতু কর্তৃপক্ষ, সেনাকল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী সমবায় ঋণদাতা সমিতি, ব্র্যাক, আশা, সামওয়ান-মীর আক্তার জয়েন্ট ভেঞ্চার এবং ব্যুরো বাংলাদেশ।