তৃতীয় প্রান্তিকেও লোকসানের মুখে ন্যাশনাল ব্যাংক
লোকসানের বৃত্ত থেকে বেরোতে পারছে না ন্যাশনাল ব্যাংক। গত বছরের মতো চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকেও লোকসান হয়েছে ব্যাংকটির।
চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ১৭ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১ টাকা ৫৫ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি হিসাববছরের তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ৪৯ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ৩ টাকা ৪৯ পয়সা লোকসান হয়েছিল। অর্থাৎ টানা দুই বছর ধরে লোকসানের বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ অভিযুক্ত দেশের বেসরকারি খাতের প্রথম প্রজন্মের এই ব্যাংকটি।
লোকসান হওয়ার কারণ সম্পর্কে ব্যাংকটি বলেছে, ঋণ ও অগ্রিমের বিপরীতে সুদ আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। ঋণগ্রহীতারা খেলাপ করায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে আমানত সংগ্রহে ব্যাংকটিকে অতিরিক্ত সুদ দিতে হয়েছে।
তৃতীয় প্রান্তিকে পরিচালন ক্ষতিও হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের।
খেলাপি ঋণে জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংক। ২০০৯ সালে যে ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪০০ কোটি টাকার কম, এখন তা বেড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে পাঁচটি ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, তাদের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি ছিল। ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২৯ শতাংশই খেলাপি। গত দুই বছরে তাদের নিট লোকসান ৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্তৃত্ব চলে যায় সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের কাছে। নিজের স্ত্রী, ছেলেমেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতাদের পর্ষদে যুক্ত করে ব্যাংকটির একক নিয়ন্ত্রণ নেয় সিকদার পরিবার। শুরু হয় অনিয়ম, ব্যাংক ছাড়েন ভালো উদ্যোক্তারা। এরপর এই ব্যাংকের কেবল অবনতিই হয়েছে।