শেয়ারের হাতবদল বৃদ্ধি কী বার্তা দিচ্ছে শেয়ারবাজারে
শেয়ারবাজারে মন্দাভাব না কাটলেও অল্প অল্প করে বাড়ছে হাতবদল হওয়া শেয়ারের সংখ্যা। গত ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে আজ সোমবার সর্বোচ্চসংখ্যক শেয়ারের হাতবদল হয়েছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)।
ডিএসইতে আজ সোমবার প্রায় ৫ কোটি ৩৬ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ ৬ কোটি ৯ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়েছিল। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রধানত দুটি কারণে বাজারে হাতবদল হওয়া শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। প্রথমত, বাজারে বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়লে। দ্বিতীয়ত, বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ারের হাতবদল বাড়লে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে শেয়ারবাজারে হাতবদল হওয়া শেয়ারের সংখ্যা বাড়ছে মূলত কৃত্রিম উপায়ে। ব্লক মার্কেটে কিছু বিনিয়োগ নিজেদের মধ্যে শেয়ারের হাতবদল করছে। এতে বাজারে লেনদেন বাড়ছে ঠিকই, কিন্তু তাতে প্রকৃত লেনদেন বাড়ছে না।
ঢাকার বাজারে আজ সোমবারও ব্লক মার্কেটে ৩৯ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ১২ শতাংশ। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন বিনিয়োগকারী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম ও বাজারে লেনদেন বাড়াতে নিজের এক বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব থেকে অন্য বিও হিসাবে শেয়ার স্থানান্তর করছেন। আবার কখনো কখনো সংঘবদ্ধভাবে নিজেদের পরিচিত বিও হিসাবের মধ্যেও এ ধরনের লেনদেন সংঘটিত হচ্ছে। এ ধরনের লেনদেনের ক্ষেত্রে দুটি ঘটনা ঘটে। প্রথমত, কৃত্রিমভাবে নিজেদের মধ্যে শেয়ারের হাতবদলের মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়ানো হয়। দ্বিতীয়ত, বাজারে লেনদেন বাড়িয়ে দেখানো যায়। লেনদেন বাড়তে দেখলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
তাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, কৃত্রিমভাবে শেয়ারের হাতবদল করে লেনদেন বাড়িয়ে দেখালে তার কোনো সুফল আদৌ বাজারে মিলবে কি? বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এতে খুব বেশি সুফল মিলবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেয়ারবাজারে শীর্ষস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক দিনে নিজেদের পত্রকোষ বা পোর্টফোলিওতে কোনো শেয়ার কিনতে পারিনি। কারণ, আগের কেনা শেয়ারে বড় ধরনের লোকসানে রয়েছি। এ অবস্থায় নতুন করে বিনিয়োগের মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই।’