রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বেস্ট হোল্ডিংসের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও শেয়ারের বরাদ্দ শেষ হয়েছে। তাতে দেশে বসবাসকারী যেসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির আইপিও শেয়ারের জন্য ১০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পেয়েছেন ৮৬টি করে শেয়ার। আর প্রবাসী বাংলাদেশি আবেদনকারীরা প্রতি ১০ হাজার টাকার আবেদনের বিপরীতে পেয়েছেন ১০১টি করে শেয়ার। আজ মঙ্গলবার কোম্পানিটির আইপিওর শেয়ারের এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নিকুঞ্জ কার্যালয়ে এ শেয়ার বরাদ্দ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। তাতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উল্লেখিত পরিমাণে শেয়ার বরাদ্দ করা হয়। ডিএসইর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানিটির আইপিওতে পৌনে চার গুণের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা যে শেয়ারের আবেদন করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন।
শেয়ারবাজারে আইপিওর ক্ষেত্রে এখন আর লটারি প্রথা নেই। ফলে যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়ে, তার আনুপাতিক ভিত্তিতে আইপিওর শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী বেস্ট হোল্ডিংসের আইপিও বরাদ্দ দেওয়া হয়। কোম্পানিটি বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজারে আসছে। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে এটির শেয়ারের ভিত্তিমূল্য নির্ধারিত হয় ৩৫ টাকা। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে প্রতিটি শেয়ারের বিক্রয়মূল্য নির্ধারিত হয় ২৪ টাকা। আইপিওতে কোম্পানিটির শেয়ারের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকার আবেদনের সীমা আরোপ করা হয়েছিল।
ডিএসই জানিয়েছে, আইপিওতে কোম্পানিটির ৩৫০ কোটি টাকার শেয়ারের বিপরীতে ১ হাজার ৩২১ কোটি ২১ লাখ টাকার বেশি আবেদন পড়ে। অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে ৩ দশমিক ৭৭ গুণ বেশি আবেদন পড়েছে। ফলে দেশে বসবাসকারী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যাঁরা এক লাখ টাকার সমমূল্যের শেয়ারের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাঁরা পেয়েছেন ৮৬০টি শেয়ার; যাঁরা ২ লাখ টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পেয়েছেন ১ হাজার ৭২০টি শেয়ার এবং যাঁরা তিন লাখ টাকার আবেদন করেছেন, তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৮০টি শেয়ার। আর যাঁরা পাঁচ লাখ টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পেয়েছেন ৪ হাজার ৩০০; ১০ লাখ টাকার আবেদনকারীরা ৮ হাজার ৬০০ এবং ১৫ লাখ টাকার আবেদনকারীরা পেয়েছেন ১২ হাজার ৯০০ শেয়ার। প্রবাসী বাংলাদেশিরা অবশ্য কিছুটা বেশি বরাদ্দ পেয়েছেন।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, বেস্ট হোল্ডিংস সব মিলিয়ে শেয়ারবাজার থেকে ৩৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে ৯৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা প্রতিটি শেয়ার কিনেছেন ৩৫ টাকায়। এ ছাড়া ৬৬ কোটি টাকার শেয়ার বরাদ্দ রাখা হয় কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁদের জন্য বরাদ্দ করা শেয়ারের আবেদন করেননি। ফলে নিয়ম অনুযায়ী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত শেয়ার আইপিওতে যুক্ত করা হয়। ফলে আইপিওর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ২৫৬ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বেশি আবেদন জমা পড়ায়, তাঁরা আবেদনের চেয়ে কম শেয়ার পাচ্ছেন। আজ এ শেয়ারের বরাদ্দ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বরাদ্দকৃত শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবে যুক্ত হবে।