মিডল্যান্ড ব্যাংকের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও শেয়ারে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগে প্রথম দিনে ২০০ টাকা লাভ করেছেন একেকজন বিনিয়োগকারী। আজ সোমবার শেয়ারবাজারে ব্যাংকটির লেনদেন শুরু হয়। প্রথম দিনের লেনদেন শেষে ব্যাংকটির শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১০ টাকা ২০ পয়সা। আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে কিনেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যাংকটির আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের বিপরীতে কম আবেদন জমা পড়েছিল। তাতে যাঁরাই এ শেয়ারের জন্য আবেদন করেছিলেন, সবাই আইপিও শেয়ার পেয়েছেন। একজন বিনিয়োগকারী সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা সমমূল্যের ১ হাজার শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকায় কিনেছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
লেনদেনের প্রথম দিনে যাঁরা ব্যাংকটির আইপিও শেয়ার বিক্রি করেছেন, তাঁরা ১০ হাজার টাকার বিনিয়োগের বিপরীতে ২০০ টাকা মুনাফা করেছেন। আর এ ২০০ টাকা মুনাফা পেতে তাঁদের অপেক্ষা করতে হয়েছে এক মাসের বেশি। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিওর আবেদন শেষ হয়। আইপিও আবেদন শেষের এক মাস পর আজ এটির লেনদেন শুরু হয়।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রথম দিনে ব্যাংকটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হয় ৯ টাকায়। তাতে দিনের শুরুতেই প্রতিটি আইপিও শেয়ারে ১ টাকা করে লোকসান ছিল বিনিয়োগকারীদের। তবে দিন শেষে দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১০ টাকা ২০ পয়সা। ডিএসইতে আজ প্রথম দিনে ব্যাংকটির প্রায় ২৩ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়।
এদিকে আইপিওতে ব্যাংকটির প্রায় ১৮ কোটি ১৪ লাখ টাকার আইপিও শেয়ার অবিক্রীত ছিল। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকটির শেয়ার কিনতে আবেদন না করায় এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছিল। ফলে নিয়ম অনুযায়ী অবিক্রীত এসব আইপিও শেয়ার কিনতে হয় পাঁচটি অবলেখনকারী বা আন্ডাররাইটার প্রতিষ্ঠানকে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী মিলিয়ে মিডল্যান্ডের ব্যাংকের আইপিওতে যে বরাদ্দ ছিল, তার চেয়ে কম শেয়ার কেনার জন্য আবেদন জমা পড়ে। সব মিলিয়ে মিডল্যান্ড ব্যাংকের আইপিওটি ছিল ৭০ কোটি টাকা দামের ৭ কোটি শেয়ারের। ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে ৬৫ কোটি টাকা দামের শেয়ার বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। তবে তার বিপরীতে জমা পড়ে ১৫ কোটি ৬ লাখ টাকার আবেদন। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১৬ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার। তার বিপরীতে জমা পড়ে ৩১ কোটি ৮০ লাখ টাকার আবেদন। এ ছাড়া ৫ কোটি টাকার শেয়ার ব্যাংকটির কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকটির আইপিওর অবিক্রীত অংশ পাঁচটি অবলেখনকারী প্রতিষ্ঠান কিনে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট, রূপালী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রূপালী ইনভেস্টমেন্ট, সোনালী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী ইনভেস্টমেন্ট, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা আইসিবি এবং লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার কিনেছে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট। আর আইসিবি কিনেছে ২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার। এ ছাড়া অন্য তিনটি মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিটি ১ কোটি ৪৮ টাকার সমমূল্যের শেয়ার কিনে নিয়েছে।