শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে দরপতন, আজও রাস্তায় ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা

দরপতনের প্রতিবাদে রাজধানীর মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ। আজ সোমবার সকাল ১১টায়।ছবি: প্রথম আলো

শেয়ারবাজারের অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে আবারও রাস্তায় নেমেছেন একদল বিনিয়োগকারী। আজ সোমবার সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর এসব বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ) ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। শেয়ারবাজারে গতকাল রোববার বড় দরপতনের পর এই ধারা আজও অব্যাহত রয়েছে।


বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী মানববন্ধন পালন করেন। এ সময় তাঁরা দরপতন ঠেকাতে ব্যর্থতার অভিযোগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।


বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন, টানা দরপতনে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। অথচ পুঁজির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিএসইসি। তাঁরা বলেন, বিনিয়োগকারীরা রাজপথে থাকতে চান না। কিন্তু সরকার এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ‘পতন ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায়’ বাধ্য হয়ে বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে এসেছেন।


এদিকে আজ শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুর প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬০ পয়েন্টের বেশি কমে যায়। গতকাল সূচকটি প্রায় দেড় শ পয়েন্ট কমে ৫ হাজারের মাইলফলকের নিচে নেমে এসেছিল। তাতে ডিএসইএক্স সূচকটি চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়।


বাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে যে দরপতন হচ্ছে, তা অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক। বিনিয়োগকারীদের চরম আস্থাহীনতার কারণে এই দরপতন হচ্ছে। সরকার ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দিক থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই দরপতন থামছে না।


তবে শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে গতকালই চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। পাশাপাশি পরিস্থিতির উত্তরণে করণীয় বিষয়েও সুপারিশ করবে এ কমিটি। ১০ দিনের মধ্যে কমিটিকে তাদের প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছে।


বাজার পরিস্থিতি ও পতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে মূল্য আয় অনুপাত সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। এ ছাড়া সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি বাজারে আনতে এবং রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ সংস্থা আইসিবির মাধ্যমে অর্থসহায়তা পেতে বিএসইসির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।’