লোকসানের ঝুঁকি কমানোর আইন পালনে আবারও ছাড় শেয়ারবাজারে
আবারও বিনিয়োগজনিত লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির (প্রভিশনিং) ক্ষেত্রে ছাড় পেল শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে এসব প্রতিষ্ঠান অনাদায়ি ক্ষতির বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা থেকে দুই বছর ছাড় পেল। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল সোমবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগজনিত লোকসানের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির ক্ষেত্রে গত ১০ বছর ধরে বারবার ছাড়ের সুবিধা পেয়ে আসছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে সেই ছাড় উঠে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেয়াদ ফুরানোর ৯ মাস আগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এ ছাড়ের সুবিধার মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে। ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মুনাফা ও শেয়ারবাজারে তাদের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাধারণত বিনিয়োগজনিত লোকসানের বিপরীতে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হলে সেটা তাদের চলতি মুনাফা থেকে রাখতে হয়। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকৃত মুনাফা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতাও কমার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে শেয়ারবাজারের মন্দা পরিস্থিতি বিবেচনায় ২০১৩ সাল থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণে বারবার ছাড় দিয়ে আসছে বিএসইসি। মূলত লোকসানের ঝুঁকি কমাতে নিরাপত্তা সঞ্চিতির এ বিধান করা হয়েছে, যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও আইনগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এতে সাময়িকভাবে মুনাফা কমলেও দীর্ঘ মেয়াদে প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি মজবুত হয়।
বিএসইসির এ-সংক্রান্ত গতকালের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সার্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে লোকসানের তথ্য প্রতি প্রান্তিকের ভিত্তিতে কমিশনকে জানাতে হবে। ব্রোকারেজ হাউসগুলো স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে আর মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে সরাসরি বিএসইসিতে এ তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে মন্দাভাব চলছে। লেনদেন নেমে এসেছে ৪০০ কোটি টাকার নিচে। গত জুলাই মাস থেকে শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ায় তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসে আটকে আছে। এ কারণে এসব শেয়ারের কোনো লেনদেন হচ্ছে না, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শেয়ারবাজারের সূচক ও লেনদেনে।