লেনদেনে গতি, ১৫০০ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই

শেয়ারবাজার
গ্রাফিকস: প্রথম আলো

শেয়ারবাজারের লেনদেনে গতি ফিরেছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। এ নিয়ে গত দুই দিন ডিএসইতে লেনদেন ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার ওপরে ছিল। লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি সূচকও বেড়েছে বাজারে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকালের লেনদেন ছিল গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে সর্বশেষ গত ২০ জানুয়ারি ডিএসইতে ১ হাজার ৬০১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তার ধাক্কা এসে লাগে শেয়ারবাজারেও। তাতে বাজারে মন্দাভাব দেখা দেয়। সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমতে শুরু করে। তারই একপর্যায়ে লেনদেন কমতে কমতে ৩০০ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে আসে। সূচক নেমে যায় ৬ হাজার পয়েন্টের মাইলফলকের নিচে। এমন এক পরিস্থিতিতে বাজারের পতন ঠেকাতে গত ৩১ জুলাই থেকে শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়া হয়। ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ার পর থেকে বাজারে লেনদেনে গতি ফিরতে শুরু করে। এর মধ্যে গত পাঁচ কার্যদিবস ধরে হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হচ্ছে ঢাকার বাজারে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কয়েক দিন ধরে লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আস্থা ফিরেছে। তাতে নিষ্ক্রিয় বিনিয়োগকারীরা আবারও বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। আবার বাজারে বেশির ভাগ শেয়ারের দাম বাড়ায় ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। তাতে তাঁরা এক শেয়ার থেকে মুনাফা তুলে নিয়ে অন্য শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। আবার আরেকটি পক্ষ বলছে, সামনে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর চাঁদা গ্রহণ শুরু হবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির করা নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমানে আইপিওতে আবেদন করতে হলে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হয়। তাই নতুন আইপিও সামনে রেখে আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ ন্যূনতম বিনিয়োগ করছেন বাজারে। তাতে লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে।

ঢাকার বাজারে গতকালও লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন এককভাবে কোম্পানিটির ১০৮ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। এ গ্রুপের তালিকাভুক্ত অপর দুই কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি টাকা, আর শাইনপুকুর সিরামিকসের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৭ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের তিন কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৩৩ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ৯ শতাংশ।

ডিএসইতে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল আরএসআরএম স্টিল। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১৮ টাকা ৭০ পয়সা।

ঢাকার বাজারে গতকাল হাতবদল হওয়া ৩৮১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৯টিরই দাম কমেছে, বেড়েছে ১২৩টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৮৯টির দাম। বেশির ভাগ শেয়ারের দাম কমলেও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে।