বড় দরপতনে ৩৫ মাসের মধ্যে সূচক সর্বনিম্ন
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচকটি আবার ৩৫ মাস আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ২১৫ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশের বেশি।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৭৭ পয়েন্ট বা প্রায় দেড় শতাংশ কমে ৫ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। গত ৩৫ মাসের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে ২০২১ সালের ৯ মে ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫ হাজার ৬৪৬ পয়েন্টে।
ঢাকার বাজারে গতকাল সূচকের পতনে বড় ভূমিকা ছিল বীকন ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, ন্যাশনাল ব্যাংক, রেনেটা, অলিম্পিক, ব্র্যাক ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংকের। এ ১০ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের কারণে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ২৮ পয়েন্ট।
তবে সূচকে বড় পতন ঘটলেও উভয় বাজারেই লেনদেনের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ঢাকার বাজারে গতকাল প্রায় ৫২৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ৪০ কোটি টাকা বেশি। চট্টগ্রামের বাজারে গতকাল লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে ৬ কোটি টাকা বেশি।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, টানা দরপতনে শেয়ারের দাম যেখানে নেমেছে তাতে এখন প্রতিদিনই বাজারে ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রির চাপ বাড়ছে। যেসব প্রতিষ্ঠান শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে, সেসব প্রতিষ্ঠান এখন ঋণের অর্থ সমন্বয়ের জন্য ওই সব শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। বাজারে পতন যত বেশি হয়, ফোর্সড সেলের চাপও তত বাড়ে।
শেয়ারবাজারে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিনিয়োগকারীদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের হিসাবে, গতকাল ১ হাজার ৩২৬ জন বিনিয়োগকারী তাঁদের সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে এসব বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব এখন শেয়ারশূন্য হয়ে গেছে। ফলে শেয়ারবাজারে শেয়ারশূন্য বিও হিসাবের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার ২২৬। বুধবার শেয়ারশূন্য বিও হিসাব ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৯০০টি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেতৃস্থানীয় একটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজার এখন যে অবস্থা চলছে তাতে বিক্রি বাড়বে এবং সূচক ঘুরে দাঁড়াবে, এমন আশা দেখছি না। প্রতিদিনই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজারে ছাড়ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাজার দীর্ঘ মেয়াদে মন্দাবস্থায় চলে যেতে পারে।’