ডিএসইর এক স্বতন্ত্র পরিচালকের শেয়ার ব্যবসার ঘটনা তদন্তে কমিটি

শেয়ারবাজারগ্রাফিকস: প্রথম আলো

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক স্বতন্ত্র পরিচালকের শেয়ার ব্যবসা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করেছে ডিএসই। ওই পরিচালক শেয়ার ব্যবসায়ে কোনো নিয়মনীতির ব্যত্যয় কিংবা কোনো ধরনের অনিয়ম করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

আজ বুধবার ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সভায় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ও ডিএসইর পরিচালক কাউসার আহমদকে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সংস্থাটির পরিচালক রুবাবা দৌলা ও শরীফ আনোয়ার হোসেন। তিন সদস্যের এই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদন ডিএসইর পর্ষদে জমা দিতে বলা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান হাফিজ মো. হাসান বাবু প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বতন্ত্র পরিচালকের শেয়ার ব্যবসার বিষয়টি নিয়ে পর্ষদে আলোচনা হয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’ বিষয়টি সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ডিএসইর চেয়ারম্যান।

ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া কিছু শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে তিনি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে শেয়ারবাজার–সংশ্লিষ্টদের মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। স্টক এক্সচেঞ্জের স্বতন্ত্র পরিচালক থাকা অবস্থায় শেয়ার ব্যবসা করা কতটা নৈতিক, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডিএসইর পর্ষদ বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয়।

এদিকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের শেয়ার ব্যবসায় যুক্ত থাকার বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকেরা প্রশ্ন তোলেন। এর জবাবে ডিবিএ নেতারা বলেন, শেয়ারধারী পরিচালকেরা যেহেতু শেয়ার ব্যবসা করেন, তাই তাঁদের স্বার্থের সংঘাত রোধে স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন বা মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদা করা হয়েছে। বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁদের শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি অনৈতিক। ডিএসইতেই যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে এবং তার জন্য ডিএসইর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে সেই বাজারে ভালো বিনিয়োগকারী আসবে না।

এদিকে পর্ষদের এক স্বতন্ত্র পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্তের দায়িত্ব পর্ষদেরই অন্য স্বতন্ত্র পরিচালকদের ওপর ন্যস্ত করার বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন (স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথকীকরণ) আইনের বিধান অনুযায়ী, পর্ষদের কোনো পরিচালকের বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে বিরোধ বা প্রশ্ন দেখা দিলে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য আলাদা একটি কমিটি রয়েছে, যেটি কনফ্লিক্ট অ্যান্ড মিটিগেশন কমিটি নামে পরিচিত।