ছাগল–কাণ্ডের মতিউর পরিবারের কারখানা লে–অফ ঘোষণা
দুর্নীতি ও ছাগল–কাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের পারিবারিক মালিকানাধীন কোম্পানি এসকে ট্রিমসের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী আজ রোববার বিনিয়োগকারীদের এ তথ্য জানিয়েছে তারা।
এর আগে গত শুক্রবার কোম্পানি লে–অফ ঘোষণার বিষয়টি নোটিশ আকারে জারি করে শ্রমিকদের জানিয়ে দেয়। পাশাপাশি শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এসকে ট্রিমস জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের নির্দেশে গত ২৫ জুন থেকে কোম্পানিটির সব ব্যাংক হিসাব বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রপ্তানিমুখী কারখানাটি বিদেশ থেকে কোনো কাঁচামালও আমদানি করতে পারছে না। ফলে কারখানায় বেশ কিছুদিন ধরে কোনো ধরনের কাজ নেই। কারখানা সচল রাখার মতো অর্থায়নেরও কোনো ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় কারখানা বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত জুনে ছেলের ছাগল–কাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মতিউর রহমান। এরপর ২৫ জুন বিএফআইইউ মতিউর রহমান পরিবারের মালিকানাধীন এসকে ট্রিমসের ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়। রপ্তানির সুবিধার্থে পরে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১১ জুলাই থেকে আবার সব ব্যাংক হিসাব বন্ধের নির্দেশ দেয়। এর পর থেকে অর্থসংকটে পড়ে কোম্পানিটি। শেষমেশ কাঁচামাল কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কোম্পানিটি জানিয়েছে, লে–অফকালে কারখানার যেসব শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদ এক বছরের বেশি হয়েছে, তাঁরা শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এসকে ট্রিমস ২০১৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটির ৩০ শতাংশের বেশি শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের পরিবারের সদস্য ও তাঁদের বিভিন্ন কোম্পানির হাতে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রায় ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ভাই এম এ কাউয়ুম হাওলাদারের হাতে, তিনি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আর ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ছেলেমেয়ের মালিকানাধীন কোম্পানি গ্লোবাল ম্যাক্স প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজের হাতে। আর প্রায় ৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে মতিউর রহমানের ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীর মালিকানাধীন কোম্পানি গ্লোবাল শুজ–এর নামে। আর বাকি প্রায় ৬৯ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
এদিকে কারখানা বন্ধের ঘোষণায় আজ ঢাকার শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের বড় দরপতন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বা ১ টাকা ৮০ পয়সা কমে দাঁড়ায় ১৬ টাকা ৬০ পয়সায়। এদিন ডিএসইতে কোম্পানিটির প্রায় ১ কোটি টাকার সমমূল্যের হাতবদল হয়।