ডিএসইর লেনদেনের এক-পঞ্চমাংশই ওষুধ খাতের দখলে
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন এখন ওষুধ খাতনির্ভর। এ বাজারে আজ মঙ্গলবার লেনদেনের এক–পঞ্চমাংশ বা ২০ শতাংশই ছিল ওষুধ খাতের। এদিন এ খাতের ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ১০৩ কোটি টাকার বেশি, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশের বেশি।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ওষুধ খাত ছাড়া অন্য কোনো খাতের সম্মিলিত লেনদেন ১০০ কোটি টাকা ছাড়ায়নি। মঙ্গলবার ঢাকার বাজারে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন ছিল বস্ত্র খাতের। এ খাতের লেনদেন হওয়া ৫৮টি কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ৬৯ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয় খাদ্য খাতের কোম্পানিগুলোর। এ খাতের ২১ কোম্পানির সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬৫ কোটি টাকা।
মূলত চারটি কোম্পানির কারণেই ওষুধ খাত আজ লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে। কোম্পানি চারটি হলো বীকন ফার্মা, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ওরিয়ন ইনফিউশন ও সেন্ট্রাল ফার্মা। এ খাতের কোম্পানিগুলোর মোট ১০৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে উল্লিখিত চার কোম্পানির শেয়ারই লেনদেন হয়েছে ৭২ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ কোম্পানি চারটির ওপর ভর করেই লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ খাত।
আজ ডিএসইতে মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ১৩ শতাংশই ছিল এই চার কোম্পানির।
শেয়ারবাজারের লেনদেন কয়েকটি কোম্পানিনির্ভর হয়ে যাওয়াকে বাজারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা। তাঁরা বলছেন, বাজার যখন কয়েকটি কোম্পানিনির্ভর হয়ে পড়ে, তখন তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সার্বিক লেনদেনে। যুক্তি হলো, কোনো কারণে এসব কোম্পানির দরপতন হলে বা লেনদেন কমে গেলে, তখন সার্বিকভাবে বাজারের লেনদেনও কমে যায়। কিছু কোম্পানি নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটে বলে বাজার ওই সব কোম্পানিনির্ভর হয়ে পড়ে।
এদিকে ওষুধ খাতের লেনদেনের ওপর ভর করে আজ ঢাকার বাজারে লেনদেন আবার ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এদিন ডিএসইতে মোট শেয়ার লেনদেন হয় ৫৪০ কোটি টাকার, যা গতকালের চেয়ে ১৭২ কোটি টাকা বেশি। কিন্তু লেনদেন বাড়লেও দরপতনের ধারা থেকে বের হতে পারেনি শেয়ারবাজার। এদিনও ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে নেমেছে। যদিও আজ লেনদেন শুরুর প্রথম ৩ মিনিটের মধ্যে সূচক ৪৪ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল। পরে তার বড় অংশ অবশ্য পুনরুদ্ধার হয়। এতে দিন শেষে বড় ধরনের দরপতন থেকে রক্ষা পায় শেয়ারবাজার।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঈদের ছুটির পর এখনো বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কম। এতে বাজারে ক্রেতাসংকট তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দরপতন অব্যাহত থাকায় বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের অনেকেই শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বাজার ছেড়ে যাচ্ছেন। তাই বাজারে গতি ফিরছে না।