তদন্তের খবরে দরপতন খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ারের
অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির তদন্তের খবরে শেয়ারবাজারে আজ মঙ্গলবার দরপতন দিয়ে শুরু হয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ারের লেনদেন। দিনের শুরুতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দরপতন হয়। তবে লেনদেনের কিছু সময় অতিবাহিত হওয়ার পর কিছুটা পুনরুদ্ধার হয় শেয়ারের দাম। লেনদেনের প্রথম ৩০ মিনিটে এই দরপতন ৩ শতাংশে নেমে আসে।
গত রোববার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। ওই দিনই দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিএসইসির এ–সংক্রান্ত এক আদেশে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কোনো ধরনের কারসাজি বা সুবিধাভোগী লেনদেন বা আইন লঙ্ঘনের ঘটনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয় আদেশে। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনকারী কর্মকর্তা ও প্রধান নির্বাহীদের কোম্পানিটির শেয়ারের সন্দেহজনক লেনদেন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গত এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৯১ টাকা। আজ মঙ্গলবার দিনের প্রথম ৩০ মিনিট শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১৭১ টাকায়। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৮০ টাকা বা ৮৮ শতাংশ বেড়েছে। যদিও আজ দিনের শুরুতে এটির দাম কমে ১৫৯ টাকায় নেমে এসেছিল। পরে সেই দাম আবার বাড়তে শুরু করে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি লোকসান গুনছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেওয়ার আর্থিক সামর্থ্যও নেই কোম্পানিটির। ২০২৩ সালে বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তা সত্ত্বেও হু হু করে বাড়ছে এটির শেয়ারের দাম। দীর্ঘদিন ধরেই শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটছে। বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত–উল–ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময়ও কোম্পানিটির শেয়ার নিয়ে কারসাজির ঘটনা ঘটলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি; বরং যেনতেন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সূচক বাড়লেই তাতে সন্তুষ্ট থাকত শিবলী কমিশন।
বন্ধ ও লোকসানি এই কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রশ্ন দেখা দিলেও কমিশনের নীরবতা কারসাজিকারকদের উৎসাহিত করে। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নতুন কমিশন দায়িত্ব নিলেও কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিটির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে নতুন কমিশন এ মূল্যবৃদ্ধি কারণ খতিয়ে দেখতে ডিএসইকে নির্দেশ দেয়।