প্রথম দিনেই বিক্রেতাশূন্য বেস্ট হোল্ডিংসের শেয়ার, সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি
লেনদেন শুরুর প্রথম দিনেই বিপুলসংখ্যক ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা নেই বেস্ট হোল্ডিংসের শেয়ারের। রাজধানীর নিকুঞ্জের লা মেরিডিয়ান হোটেলের মালিকানায় থাকা এ কোম্পানিটির শেয়ারের লেনদেন শুরু হয়েছে আজ মঙ্গলবার। সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেল বাজিয়ে কোম্পানিটির তালিকাভুক্তির উদ্বোধন করা হয়।
লেনদেনের শুরুতেই এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। বিপুলসংখ্যক ক্রেতা দিনের সর্বোচ্চ দামে কোম্পানিটির শেয়ার কেনার জন্য ক্রয়াদেশ দেন। কিন্তু বিক্রেতা ছিলেন হাতে গোনা। ফলে এদিন খুব বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়নি কোম্পানিটির শেয়ারের। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সকাল ১০টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত বিরতিহীন সাড়ে চার ঘণ্টার লেনদেনে মাত্র ৯৫৮টি শেয়ারের হাতবদল হয়। এসব শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৬ টাকা ৪০ পয়সায়। নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দাম এক দিনে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। সেই হিসাবে কোম্পানিটির আইপিওর ২৪ টাকা দামের শেয়ার লেনদেনের শুরুতেই ১০ শতাংশ বেড়ে যায়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে বেস্ট হোল্ডিংস শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এ পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ার কিনেছেন ৩৫ টাকায়। কারণ, বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত দর প্রস্তাবে কোম্পানিটির শেয়ারের ভিত্তিমূল্য বা কাট অব প্রাইস নির্ধারিত হয়েছিল এটিই। ৩৫ টাকায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কোম্পানিটির ৯৩ কোটি টাকার সমমূল্যের শেয়ার কিনে নেন। আর প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রি করা হয় ২৫৬ কোটি টাকার বেশি শেয়ার। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয় ২৪ টাকায়। তবে আইপিওর শেয়ারের জন্য বরাদ্দকৃত শেয়ারের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি আবেদন জমা পড়ে। এ কারণে আবেদনকারীরা খুবই কমসংখ্যক শেয়ার বরাদ্দ পান।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বসবাসকারী যেসব বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির আইপিও শেয়ারের জন্য ১০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পেয়েছেন ৮৬টি করে শেয়ার। আর প্রবাসী বাংলাদেশি আবেদনকারীরা প্রতি ১০ হাজার টাকার আবেদনের বিপরীতে পেয়েছেন ১০১টি করে শেয়ার।
এদিকে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ‘এন’ শ্রেণিভুক্ত হয়ে আজ কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয়েছে। নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী বেস্ট হোল্ডিংসের শেয়ার কিনতে প্রথম এক মাস কোনো ধরনের ঋণের সুবিধা পাবেন না বিনিয়োগকারীরা। তা সত্ত্বেও সকালে লেনদেন শুরুর সঙ্গে সঙ্গে নগদ টাকায় কোম্পানিটির দুই কোটির বেশি শেয়ারের ক্রয়াদেশ ছিল।
নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে আইপিওতে পাওয়া শেয়ার বিনিয়োগকারীরা বিক্রি না করলে ওই শেয়ারের আর কোনো বিক্রেতা থাকেন না। ফলে ক্রেতারা কিনতে চেয়েও এ শেয়ার কিনতে পারেন না। এর ফলে দেখা যায়, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে শুরুর বেশ কিছুদিন আইপিও শেয়ারের কোনো বিক্রেতা থাকেন না। তাতে প্রতিদিনই এ শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। দাম বাড়তে বাড়তে একটি পর্যায়ে পৌঁছানোর পর আইপিও শেয়ারধারীরা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন। তখন সেকেন্ডারি বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের হাতবদল বাড়তে থাকে, দামও একটি পর্যায়ে গিয়ে স্বাভাবিক হয়। বেস্ট হোল্ডিংসের ক্ষেত্রেও তা–ই দেখা যাচ্ছে। বিক্রেতা না থাকায় প্রথম দিনেই এটির শেয়ারের সর্বোচ্চ ২ টাকা ৪০ পয়সা দাম বেড়েছে।