শেয়ারবাজারে নতুন কোম্পানি আনতে কর অব্যাহতি চায় সিএসই

সিএসইর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিমছবি: সংগৃহীত

শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য কর সুবিধার দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি বলছে, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার পাশাপাশি নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে কয়েক বছরের জন্য কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া দরকার। সেটি হলে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে আগ্রহ বাড়বে বিভিন্ন কোম্পানির।

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সামনে রেখে আয়োজিত এক প্রাক্‌-বাজেট সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরে সংস্থাটি। আজ রোববার সিএসইর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সিএসইর পরিচালক এমদাদুল ইসলাম, মোহাম্মাদ নকিব উদ্দিন খান, মোহাম্মদ আখতার পারভেজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম সাইফুর রহমান মজুমদারসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সিএসইর পক্ষ থেকে আরও যেসব দাবি তুলে ধরা হয়, তার মধ্যে রয়েছে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়াতে পদক্ষেপ গ্রহণ। এ জন্য লভ্যাংশের ওপর দ্বৈত কর প্রত্যাহারের পাশাপাশি মূলধনি মুনাফা বা ক্যাপিটাল গেইনের ওপর থেকে কর প্রত্যাহার, মিউচুয়াল ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডের (ইটিএফ) বিনিয়োগের ওপর কর রেয়াত সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সিএসই। সংস্থাটি এ–ও বলেছে, যদি শেয়ারবাজারের মূলধনি মুনাফার ওপর করারোপ করা হয়, তবে সেটিকে যেন চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাজেট সামনে রেখে শেয়ারবাজারে বন্ড মার্কেটকে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছে সিএসই। সংস্থাটি বলছে, তালিকাভুক্ত বন্ডের সুদের ওপর কর অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হলে তাতে বন্ডে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়বে বিনিয়োগকারীদের। এ ছাড়া ব্লু ও গ্রিন বন্ডে কর অব্যাহতিসহ কর রেয়াত সুবিধা দেওয়া হলে তাতে এ ধরনের বন্ডে দেশি-বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। তাতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাভিত্তিক বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বাড়ানো সম্ভব।

শেয়ারবাজারে পণ্যবৈচিত্র্য বাড়াতে অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড ও স্বল্প মূলধনি কোম্পানির জন্য গঠিত বোর্ডে তালিকাভুক্তি উৎসাহিত করতে দুই-তিন বছরের জন্য কর অব্যাহতি প্রদান, স্টক এক্সচেঞ্জের প্রয়োজনে যেসব হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় তার ওপর থেকে সব ধরনের কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছে সিএসই। এ ছাড়া আগামী বাজেটে কমোডিটি এক্সচেঞ্জকে পাঁচ বছরের জন্য কর অব্যাহতি প্রদানেরও দাবি করেছে সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর জন্য এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে সিএসই। সংস্থাটি আগামী বছরের মধ্যে দেশে প্রথম কমোডিটি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এ কারণে কমোডিটি এক্সচেঞ্জকে পাঁচ বছরের জন্য করের আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে সিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক বাজার–কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাজেট শুধু বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব নয়। বাজেটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত দিকনির্দেশনাও তুলে ধরা হয়। তাই আমরা মনে করি আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের গুণগত সম্প্রসারণ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য যথাযথ দিকনির্দেশনা তুলে ধরা হবে। আমরা মনে করি আমাদের দাবিগুলো স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হলে তাতে একটি কার্যকর পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।’