কারসাজির ভয়, আস্থার সংকটে বিনিয়োগকারী
‘কারসাজি’র ভীতিতে শেয়ারবাজার বিমুখ হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। কারসাজির শেয়ারের দাপটে শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা ভালো শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে বাজারে শেয়ারের দাম পড়ছে। টানা পতনের ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবারও দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৮৩ শতাংশেরই দাম কমেছে, বেড়েছে মাত্র ৯ শতাংশের।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল এক দিনেই কমেছে ৭০ পয়েন্ট বা প্রায় সোয়া ১ শতাংশ। তাতে সূচকটি নেমে এসেছে ৫ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে। প্রায় ৩৪ মাসের মধ্যে ডিএসইএক্স সূচক এতটা নিচে নামল। এর আগে সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৫ মে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৮৮৫ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল।
বাজারের এ পতনের জন্য বিনিয়োগকারীদের ‘আস্থাহীনতা ও আতঙ্কিত হয়ে পড়াকে’ বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ কারণে অনেকে হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। যেসব কারণে এ আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, তার অন্যতম খারাপ শেয়ার নিয়ে কারসাজি আর তার বিপরীতে ভালো শেয়ারের দরপতন। দুইয়ে মিলে বাজারের প্রতি আস্থা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীদের বড় অংশ।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল এক দিনেই কমেছে ৭০ পয়েন্ট বা প্রায় সোয়া ১ শতাংশ। তাতে সূচকটি নেমে এসেছে ৫ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে। প্রায় ৩৪ মাসের মধ্যে ডিএসইএক্স সূচক এতটা নিচে নামল।
বাজার সূত্রগুলো বলছে, খারাপ কিছু শেয়ার নিয়ে কারসাজি করছে বাজারেরই একটি অংশ, আর এই শেয়ারগুলো পরিচিতি পেয়েছে ‘কারসাজির শেয়ার’ হিসেবে।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর বাজারে যে কিছুটা দরপতন হতে পারে, এটা অনুমেয় ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে বাজার পড়ছে, তার বড় কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ‘শেয়ারবাজারবিষয়ক মনোভাব জরিপ’ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ। প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১০০ বিনিয়োগকারীর ওপর মতামতধর্মী এ জরিপ করে। জরিপে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৭৮ শতাংশই জানিয়েছেন, গত বছর শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে ‘কারসাজির ভয়’। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বড় সংকট দেখা দেয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৬৬ শতাংশ বিনিয়োগকারী জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে শেয়ারবাজারের ওপর তাদের আস্থা কমেছে। এ আস্থাহীনতাকে চলতি বছরে শেয়ারবাজারের জন্য বড় ঝুঁকির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জরিপে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীরা।
ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর বাজারে যে কিছুটা দরপতন হতে পারে, এটা অনুমেয় ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে বাজার পড়ছে, তার বড় কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে।ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী, বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান
‘কারসাজির’ ঘটনা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে যে বড় ভীতি বা হতাশার কারণ, তা বাজার–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে। বাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে পুরো বাজারটিই বলতে গেলে কারসাজির শেয়ারনির্ভর হয়ে গেছে। দুর্বল ও নিম্নমানের কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বেশি কারসাজির ঘটনা ঘটছে। এ কারণে বেশ কিছুদিন ধরে মূল্যবৃদ্ধি ও লেনদেনের ক্ষেত্রে দুর্বল ও মানহীন কোম্পানির আধিক্য দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি প্রাতিষ্ঠানিক ও ভালো বিনিয়োগকারীদের বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করছে।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, কারসাজি করে খারাপ শেয়ারের দাম যেভাবে বাড়ানো হয়েছে, তার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো ভালো শেয়ারের দাম কমেছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বাজারের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন।
শেয়ারবাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফেরাতে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কয়েক ধাপে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।
হতাশা ছড়াচ্ছে খারাপ কোম্পানি
ঢাকার বাজারে গতকালও লেনদেনের শীর্ষে ছিল লোকসানি ও দুর্বল মানের কোম্পানি গোল্ডেনসন। দিনের লেনদেনের শুরুতে এটির শেয়ারের দাম আগের দিনের চেয়ে ৪০ পয়সা বেড়ে ২৩ টাকা ৬০ পয়সায় ওঠে। এরপর বাজারে দরপতন শুরু হলে কোম্পানিটির শেয়ারের দামও দ্রুত কমতে থাকে। একপর্যায়ে এটি প্রায় ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। দিন শেষে গোল্ডেনসনের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ২১ টাকা ১০ পয়সা।
গোল্ডেনসন ছাড়াও গতকাল ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির তালিকায় ছিল ফু-ওয়াং সিরামিক, গোল্ডেন হারভেস্ট, লাভেলো ও সেন্ট্রাল ফার্মা। এসব কোম্পানির বেশির ভাগই নিম্নমানের ও লোকসানি কোম্পানি। বাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজিতে মেতেছে বাজারের একটি গোষ্ঠী। সেই কারণে মাসের পর মাস ধরে শেয়ারবাজার এ ধরনের নিম্নমানের কোম্পানিনির্ভর হয়ে পড়েছে। একদিকে খারাপ কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে বাড়ছে, অন্যদিকে ভালো কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হচ্ছে। ফলে ভালো শেয়ারও বিক্রি করে দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।
শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয় গত মাসের শেষ ভাগে। এরপর কয়েক দিন সূচক কিছুটা করে বাড়লেও বেশির ভাগ দিনই এটি কমেছে। ফলে লম্বা সময় ধরে দরপতনের কারণে বাজারে এখন জোর করে বিক্রি বা ফোসর্ড সেলের আতঙ্ক শুরু হয়েছে।
কারসাজিতে বড় ক্ষতি বিনিয়োগকারীর
গত দুই বছরে কারসাজির শেয়ারের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিপুল ক্ষতির বড় উদাহরণ রয়েছে এমারেল্ড অয়েল, সী পার্ল বিচ রিসোর্ট, পেপার প্রসেসিংসহ আরও বেশ কিছু কোম্পানি। ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর একটানা মূল্যবৃদ্ধিতে সী পার্লের ৪৪ টাকার শেয়ার ছয় মাসে ৩২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। হু হু করে দাম বাড়তে থাকায় কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অনেকে। বেশির ভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারী এ শেয়ার কেনেন ২০০ টাকার বেশি দামে। দাম বাড়িয়ে কারসাজিকারকেরা চড়া দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করেন। এরপরই দাম পড়তে থাকে। গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম নেমেছে ৯৩ টাকায়। ফলে যাঁরা ২০০ টাকায় এ শেয়ার কিনেছেন, তাঁদের বিনিয়োগ অর্ধেক হয়ে গেছে ছয়–সাত মাসে। তাতে এসব বিনিয়োগকারীদের বড় অঙ্কের বিনিয়োগ আটকে গেছে এ শেয়ারে।
একই অবস্থা এমারেল্ড অয়েল, পেপার প্রসেসিং, গোল্ডেনসনসহ কারসাজির ১৫-২০টি শেয়ারে। দরপতন শুরু হলে এসব শেয়ারের কোনো ক্রেতা থাকে না। ফলে একপর্যায়ে লোকসান দিয়েও এসব শেয়ার বিক্রি করা যায় না।
বাজার–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিছু বাজে কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গত দুই বছরে নানা কারসাজির ঘটনা ঘটলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থায় নেয়নি। দুই বছরে ফ্লোর প্রাইসের সুযোগ নিয়ে এসব কারসাজির ঘটনা ঘটানো হয়। তাতে একদিকে কারসাজিকারকেরা উৎসাহিত হয়েছেন, অন্যদিকে ভালো ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা হয়েছেন হতাশ। তাঁদের মতে, গত দুই বছরের নানা অনিয়মের ফল এখন বাজারে পড়তে শুরু করেছে।
এত দিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বেঁধে (ফ্লোর প্রাইস) দিয়ে বাজারকে ধরে রাখলেও ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়ায় এখন বাজারে অনিয়মের প্রভাব প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। বাজার–সংশ্লিষ্টদের মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজারে কারসাজি বন্ধে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থার আশীর্বাদে কোনো কোনো কারসাজিকারক বাজারে ইচ্ছেমতো ‘খেলাধুলা’ করেছে। গুটিকয় সুবিধাভোগীর কারণে এখন খেসারত দিতে হচ্ছে সবাইকে।
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল সূচকের বড় পতনের পেছনে বেশি ভূমিকা রেখেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসি, রেনেটা, ওরিয়ন ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশন ও আইএফআইসি ব্যাংক।
দুই মাসে সূচক কমেছে ৪৩৯ পয়েন্ট
শেয়ারবাজারকে স্বাভাবিক ধারায় ফেরাতে গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কয়েক ধাপে সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের আগে গত ১৮ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচকটি ছিল ৬ হাজার ৩৩৭ পয়েন্টে। গতকালের বড় দরপতনের পর সেটি ৫ হাজার ৯০০ পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে। তাতে প্রায় দুই মাসের ব্যবধানে সূচকটি ৪৩৯ পয়েন্ট বা প্রায় ৭ শতাংশ কমে গেছে।
শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয় গত মাসের শেষ ভাগে। এরপর কয়েক দিন সূচক কিছুটা করে বাড়লেও বেশির ভাগ দিনই এটি কমেছে। ফলে লম্বা সময় ধরে দরপতনের কারণে বাজারে এখন জোর করে বিক্রি বা ফোসর্ড সেলের আতঙ্ক শুরু হয়েছে। শেয়ারবাজারে যাঁরা ঋণ করে বিনিয়োগ করেন, তাঁদের শেয়ারের দাম নির্ধারিত একটি সীমার নিচে নেমে গেলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ে ওই বিনিয়োগকারীর বিও হিসাবে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেয়। শেয়ারবাজারে এটি ফোর্সড সেল হিসেবে পরিচিত।
ঢাকার বাজারে কয়েকজন বিনিয়োগকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গত এক সপ্তাহে তাঁরা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন বিনিয়োগকারী ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করেও ফোর্সড সেলের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।
আমরা আশা করছি, শিগগিরই ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার ঘুরে দাঁড়াবে। আর সেটি হলে বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।মোহাম্মদ রেজাউল করিম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র
দরপতনে বড় ভূমিকা ভালো শেয়ারের
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল সূচকের বড় পতনের পেছনে বেশি ভূমিকা রেখেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসি, রেনেটা, ওরিয়ন ফার্মা, ওরিয়ন ইনফিউশন ও আইএফআইসি ব্যাংক। এই পাঁচ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে গতকাল ডিএসইএক্স সূচকটি কমেছে প্রায় ১৭ পয়েন্ট।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বিএটিবিসির শেয়ারের দাম গত ১০ কার্যদিবসেই কমেছে ৯৬ টাকা। এতে অত্যন্ত ভালো মৌলভিত্তির এ শেয়ারে বিনিয়োগ করেও ঋণগ্রস্ত অনেক বিনিয়োগকারী ফোর্সড সেলের আওতায় পড়েছেন। গত দুই বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ার এখন সর্বনিম্ন দামে লেনদেন হচ্ছে বাজারে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামের উত্থান হয়েছে। এ সময় ভালো মানের কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক দরপতন হয়েছে। তাতে এসব শেয়ার অবমূল্যায়িত পর্যায়ে চলে এসেছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ার ঘুরে দাঁড়াবে। আর সেটি হলে বাজারে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অর্থনীতির প্রভাব বাজারে
লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের জরিপে বিনিয়োগকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চলতি বছর কী কী কারণে শেয়ারবাজার প্রভাবিত হতে পারে। এর জবাবে অংশগ্রহণকারীদের ৫৭ শতাংশ বলেছেন, সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বাজারকে প্রভাবিত করবে বেশি। শেয়ারবাজারে বিশ্লেষক ও বাজার–সংশ্লিষ্টরাও তা–ই মনে করেন। তাঁরা বলছেন, ব্যাংক খাতে এখন তারল্যসংকট চলছে। এ কারণে আমানতের সুদের হার ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতি শেয়ারবাজারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের বদলে বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে চড়া সুদে অর্থলগ্নিতে বেশি আগ্রহী হবেন, এটাই স্বাভাবিক।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী মনে করেন, ব্যাংকে আমানতের সুদের হার বাড়ার কারণে শেয়ারবাজারের চেয়ে ব্যাংকে টাকা রাখাকে অনেকে নিরাপদ ভাবছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বাজারের দরপতন, যাকে তিনি বর্ণনা করছেন ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে। তাঁর মতে, যতটা না অর্থনীতির বাস্তব পরিস্থিতির কারণে বাজারের পতন হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি প্রভাব রাখছে বিনিয়োগকারীদের হতাশা ও ভয়।