‘কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ বিবেচনাযোগ্য’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থকে অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার লক্ষ্যে এ প্রস্তাব বিবেচনার দাবি রাখে।
কালোটাকাকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে শেয়ারবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য বলে মনে করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম। তিনি বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থকে অর্থনীতির মূল স্রোতে আনার লক্ষ্যে এ প্রস্তাব বিবেচনার দাবি রাখে। এসব টাকা অর্থনীতির মূলধারার বাইরে থাকলে কোনো লাভ হয় না। কাজে আসে না; বরং এগুলোকে অর্থনীতির মূলধারায় নিয়ে আসতে পারলে দেশের জন্য তা মঙ্গলজনক।
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট ও শেয়ারবাজারে তার প্রভাব নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিএমজেএফ অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন বিএমবিএর সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুল আলম বলেন, সরকার পুঁজিবাজারের উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। আমিও চাই, এই বাজার আরও ভালো চলুক, বড় কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসুক। এসব কোম্পানিতে জনগণের অংশীদারত্ব বাড়ুক।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বিএমবিএ সভাপতি ৫ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেন। এ সুযোগ দেওয়া হলে তাতে একদিকে কালোটাকা অর্থনীতির মূলধারায় আসবে। অন্যদিকে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া তিনি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়, এমন কোম্পানির কর হারের ব্যবধান কমপক্ষে ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করেন। তাতে বড় ও লাভজনক কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে। এ ছাড়া লভ্যাংশ বিতরণের সময় কোম্পানিগুলো যে উৎসে কর কেটে রাখে, সেটাকে চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে বিবেচনার সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমান।
বাজার পরিস্থিতি
বাজেট ঘোষণার পর শেয়ারবাজারে টানা যে দরপতন শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে গতকাল। এদিন সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচকটি গতকাল ১৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে। এর আগে গত রোববার থেকে মঙ্গলবার তিন কার্যদিবসে এ সূচকটি ১১৯ পয়েন্ট কমে গিয়েছিল। সেখান থেকে ১৩ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার হয়েছে গতকাল। পাশাপাশি দিন শেষে লেনদেন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪৪ কোটি টাকায়, যা আগের দিনের চেয়ে ৬৯ কোটি টাকা বেশি।
ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৮২ কোম্পানির মধ্যে ১৭৫টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে ১৬১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৬টির দাম। খাতভিত্তিক লেনদেনে এদিন শীর্ষে ছিল বিবিধ খাতের কোম্পানিগুলো। এ খাতের লেনদেন হওয়া ১৫ কোম্পানির মধ্যে ১০টিরই দাম বেড়েছে। কমেছে ৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১টির দাম। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ৫ কোম্পানির ২টিই ছিল বিবিধ খাতের কোম্পানি। কোম্পানি দুটি হলো জেএমআই হসপিটাল ও বেক্সিমকো লিমিটেড।
এদিকে নতুন টাইলস কারখানা স্থাপনে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের ঘোষণায় গতকাল শেয়ারবাজারে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে আরএকে সিরামিকস। এদিন কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪ টাকা ৭০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ টাকা ৭০ পয়সায়। কোম্পানিটি গত মঙ্গলবার গাজীপুরে নতুন টাইলস কারখানা করতে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়।