সর্বজনীন পেনশনে সাড়া কম, দ্বিতীয় মাসে যোগ দিয়েছেন ১,৮৩১ জন
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছে না সরকার। চালু হওয়ার পর দুই মাসে দেশ-বিদেশ মিলিয়ে মোট ১৪ হাজার ৭২০ জন বাংলাদেশি পেনশন স্কিমে চাঁদা পরিশোধ করেছেন। চাঁদার মোট পরিমাণ ১১ কোটি ৬৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।
অথচ গত ১৭ আগস্ট এ স্কিম উদ্বোধনের পর এক মাসে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাঁদা পরিশোধ করেছিলেন ১২ হাজার ৮৮৯ জন। সে হিসাবে দ্বিতীয় মাসে এ স্কিমে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৩১ জন। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পেনশন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং উদ্বোধনের দিন থেকেই সবার জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়। প্রথম দিন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে আট হাজার মানুষ অনলাইনে নিবন্ধন করেছিলেন। এর মধ্যে ১ হাজার ৭০০ জন আবেদনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চাঁদা পরিশোধ করেন সেদিন।
শুরুতে চার শ্রেণির জনগোষ্ঠীর জন্য চার ধরনের পেনশন কর্মসূচি চালু করা হয়। এগুলোর নাম হচ্ছে প্রগতি, সুরক্ষা, সমতা ও প্রবাস। এর মধ্যে বেসরকারি খাতের চাকরিজীবীদের জন্য ‘প্রগতি’, স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের জন্য ‘সুরক্ষা’, প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘প্রবাস’ এবং দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য ‘সমতা’।
পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, চার কর্মসূচির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া গেছে প্রগতি কর্মসূচিতে। বেসরকারি চাকরিজীবীদের এ কর্মসূচির জন্য মোট ৬ হাজার ৬৭৪ জন চাঁদা পরিশোধ করেছেন। গত মাসে দিয়েছিলেন ৬ হাজার ১৭৮ জন।
এরপর বেশি সাড়া পেয়েছে সুরক্ষা কর্মসূচি। দুই মাসে ৫ হাজার ৯৫২ জন চাঁদা দিয়েছেন। গত মাসে দিয়েছিলেন ৪ হাজার ৬৯০ জন।
সমতা কর্মসূচির জন্য দুই মাসে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ১ হাজার ৬৪৯ জন। প্রথম এক মাসে এ স্কিমে চাঁদা দিয়েছিলেন ১ হাজার ৩২৬ জন।
আর সবচেয়ে কম সাড়া পড়েছে প্রবাস স্কিমে। দুই মাসে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৪৪৫ জন। প্রথম এক মাসে এ স্কিমে ৩৯৫ জন চাঁদার কিস্তি দিয়েছিলেন।
চার স্কিমের মধ্যে প্রগতিতে ৬ কোটি ১১ লাখ টাকা, সুরক্ষায় প্রায় ৪ কোটি, প্রবাসে ১ কোটি ১১ লাখ এবং সমতায় ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা চাঁদা জমা পড়েছে।
সবার জন্য চালু করা পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা পাসপোর্ট নম্বর, একটি সচল মুঠোফোন নম্বর, ব্যাংক হিসাব নম্বর, নমিনির এনআইডি ইত্যাদি তথ্য লাগে।
চাঁদা দিয়ে পেনশন-ব্যবস্থার আওতায় আসতে পারেন ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ। দেশের অন্তত ১০ কোটি মানুষ পেনশনব্যবস্থার আওতায় আসবেন, এমন প্রত্যাশা সরকারের রয়েছে। বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় আনা এবং নিম্ন আয় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত সমাজের ৮৫ শতাংশ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই পেনশন স্কিম চালু করা হয়।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পেনশন স্কিমে ভালো সাড়া পাব বলে আমরা আশা করছি। সোনালী ব্যাংকের পাশাপাশি অগ্রণী ব্যাংককেও এখন পেনশন সেবা দেওয়ার জন্য যুক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও ব্যাংককে যুক্ত করা হবে।’