রপ্তানিমুখী এসএমই খাতে ঋণ বাড়াবে সোনালী ব্যাংক
নতুন বছরে আস্থা ও সেবার মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে চায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। এ জন্য রপ্তানিমুখী এসএমই খাতে অর্থায়ন বাড়াতে চায় ব্যাংকটি। আজ বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শওকত আলী খান এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য জানান।
রাজধানীর মতিঝিলে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে বিগত বছরের অর্জন সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় শওকত আলী খান এসব তথ্য জানান।
মতবিনিময় সভায় সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ব্যাংকটি সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে ৫ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। এই মুনাফা আগের বছরের চেয়ে ১ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা বেশি। ২০২৩ সালে সোনালী ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত ওই বছর ব্যাংকটির নিট মুনাফা দাঁড়ায় ৬৫১ কোটি টাকায়।
শওকত আলী খান বলেন, ২০২৪ সালে ব্যাংকটির আমানত ১৪ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকায়। তবে ২০২৩ সালের তুলনায় ঋণ কমেছে ১ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা। গত বছর শেষে ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায় শোধ করে দেওয়ার কারণে ঋণ কমে গেছে। তবে প্রকৃত ঋণ ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি আরও বলেন, ২০২৪ সালে ব্যাংকটির প্রকৃত সুদ আয় বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের চেয়ে যা ৯৪৯ কোটি টাকা বেশি। ২০২৩ সালে প্রকৃত সুদ আয় ছিল ৪৭৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০২৩ সালের তুলনায় খেলাপি ঋণ ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সদ্য বিদায়ী বছর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।
মতবিনিময় সভায় ব্যাংকটির শীর্ষ ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠান হল–মার্ক গ্রুপের ঋণ আদায় সম্পর্কে জানতে চান সাংবাদিকেরা। জবাবে সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে যেসব আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ছিল, তার সবই নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির আরও ১৬৭ একর জমি সংযুক্ত করা হয়েছে।
বেক্সিমকো গ্রুপের পাওনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ‘তাদের শাইনপুকুর সিরামিক ছাড়া গ্রুপটির অন্য সব প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে। বেক্সিমকোর কাছে সোনালী ব্যাংকের পাওনা প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। সাইনপুকুর সিরামিকের পণ্য নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠান শুরু থেকে ভালো করছে। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে এটি চালু রাখতে চেষ্টা করছি।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সোনালী ই-ওয়ালেট, আই-ব্যাংকিং, অনলাইন ইসলামী ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সব ধরনের সেবা মিলছে। এসব সেবায় ভালো লেনদেনও হচ্ছে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র দাস, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।