ব্যাংকঋণের সুদ বেশি হওয়ায় মুনাফা কমল ওয়ালটনের
ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের কারণে মুনাফা কমে গেছে ইলেকট্রনিকস খাতের দেশীয় জায়ান্ট ওয়ালটনের। পাশাপাশি ডলারের উচ্চ বিনিময়মূল্যের কারণেও বড় অঙ্কের লোকসান করেছে কোম্পানিটি। তাতে চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে সুদ ও ডলার বাবদ কোম্পানিটির খরচ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তাতে তাদের মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ আজ মঙ্গলবার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে মুনাফা কমে যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ঋণের সুদ, ডলারের বিনিময়মূল্য ও আবগারি শুল্ক বাবদ ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে খরচ করতে হয়েছে ১২৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে খরচের পরিমাণ ছিল ৬৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে কোম্পানিটির খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে ভালো ব্যবসার পরও প্রান্তিক শেষে তাদের মুনাফা কমে গেছে।
এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যেও গত জুলাইয়ে ওয়ালটনের ব্যবসায় বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর—এই তিন মাসে কোম্পানিটি ১ হাজার ২১৫ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ওয়ালটনের বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ কোটি টাকা বা ১ শতাংশের মতো বেড়েছে। ব্যবসা যতটা বেড়েছে, সেই তুলনায় প্রশাসনিক ও পণ্য বিক্রয় এবং বিতরণ বাবদ খরচ বেশি বেড়েছে। ফলে পরিচালন মুনাফা কমেছে।
গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ১ হাজার ২১৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে ওয়ালটনের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২৬০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে ১ হাজার ২০৩ কোটি টাকার ব্যবসা করে পরিচালন মুনাফা করেছিল ২৭২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের চেয়ে আয় কিছুটা বেশি হলেও পরিচালন মুনাফা কমেছে ১২ কোটি টাকা।
ওয়ালটন জানায়, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ডলারের বিনিময়মূল্যের কারণে তাদের প্রায় ৪৬ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটির লোকসান ছিল মাত্র ২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ডলার কেনায় তাদের লোকসান বেড়েছে ৪৪ কোটি টাকা। বড় অঙ্কের এই লোকসানের কারণে কোম্পানির মুনাফা কমেছে।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ১৪৯ কোটি টাকা। তাতে শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৯২ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে ওয়ালটনের মুনাফার পরিমাণ ছিল ২০২ কোটি টাকা। তাতে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছিল ৬ টাকা ৬৭ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে ওয়ালটনের মুনাফা ৫৩ কোটি টাকা বা ২৬ শতাংশের বেশি কমেছে।