আইসিসিবির নিউজ বুলেটিন
সততা ও নৈতিকতার অপ্রতিদ্বন্দ্বী উদাহরণ লতিফুর রহমান
দেশের প্রভাবশালী এই ব্যবসায়িক সংগঠন ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের অবদান ও জীবনাদর্শ তুলে ধরা হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ত্রৈমাসিক নিউজ বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে। লতিফুর রহমান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সততা ও বিশুদ্ধতায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ব্যবসায়ে সর্বোচ্চ নৈতিক মান বজায় রাখা ও দেশপ্রেমের জন্য তিনি সর্বজনীন সম্মান পেতেন—এভাবেই মূল্যায়ন করা হয়েছে তাঁকে।
ট্রান্সকম গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সততা ও বিশুদ্ধতায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ব্যবসায়ে সর্বোচ্চ নৈতিক মান বজায় রাখা ও দেশপ্রেমের জন্য তিনি সর্বজনীন সম্মান পেতেন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে যাঁরা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রযাত্রায় অবদান রেখেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তিনি দেখিয়েছিলেন যে ব্যবসায়ে উচ্চ নৈতিক মান বজায় রেখে জাতিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) ত্রৈমাসিক নিউজ বুলেটিনের সম্পাদকীয়তে এভাবেই লতিফুর রহমানকে মূল্যায়ন করা হয়েছে, যিনি গত ১ জুলাই ৭৫ বছর বয়সে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে মারা যান।
বর্তমানে ট্রান্সকমের ওষুধ, খাবার, লাইটিং, ইলেকট্রনিকস ও মিডিয়াসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ট্রান্সকম আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পিৎজা হাট, কেএফসি, পেপসিকো ও ফিলিপসের স্থানীয় ব্যবসায়িক অংশীদার। মোট লোকবল ১৭ হাজার।
আইসিসিবি বলছে, ‘লতিফুর রহমান বিশ্বাস করতেন যে পরের দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বিকশিত হবে এবং এ জন্য আমাদের একত্র হতে হবে। তিনি মনে করতেন, গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত ও স্বাধীন সংবাদপত্র প্রয়োজন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি ও বাংলা দৈনিকের মালিক হওয়ার কারণে বহুবার হয়রানির শিকার হন; কিন্তু তিনি পত্রিকার সম্পাদকদের কখনো কোনো প্রকার চাপ দেননি।
লতিফুর রহমান আইসিসিবির প্রতিষ্ঠালগ্নের সদস্য এবং মৃত্যুকালে আইসিসিবি ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টারের (বিয়াক) সহসভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি দুই দফায় ২০১১-১৭ সাল পর্যন্ত প্যারিসভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের নির্বাহী সদস্য ছিলেন।
যখন প্রথম আমরা কাজে যোগদান করি, তখন তিনি আমাদের খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে আমরা চেয়ারম্যানের সন্তান হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো বাড়তি সুবিধা পাব না। আমরা বেতনভুক্ত থাকব এবং সবার জন্য প্রতিষ্ঠানের যে বিধিবিধান আছে, আমাদের জন্যও তা-ই প্রযোজ্য হবে।
লতিফুর রহমান ১৯৬৬ সালে তাঁর পারিবারিক মালিকানাধীন ডব্লিউ রহমান জুট মিলসে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৭৩ সালে তিনি ট্রান্সকম গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। ধীরে ধীরে তিনি নিজস্ব দক্ষতায় ব্যবসায়কে বৈচিত্র্যময় করে তোলেন।
বর্তমানে ট্রান্সকমের ওষুধ, খাবার, লাইটিং, ইলেকট্রনিকস ও মিডিয়াসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ট্রান্সকম আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পিৎজা হাট, কেএফসি, পেপসিকো ও ফিলিপসের স্থানীয় ব্যবসায়িক অংশীদার। মোট লোকবল ১৭ হাজার।
লতিফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা ট্রান্সকম গ্রুপের এমডি ও গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান বলেন, ‘যখন প্রথম আমরা কাজে যোগদান করি, তখন তিনি আমাদের খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে আমরা চেয়ারম্যানের সন্তান হওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো বাড়তি সুবিধা পাব না। আমরা বেতনভুক্ত থাকব এবং সবার জন্য প্রতিষ্ঠানের যে বিধিবিধান আছে, আমাদের জন্যও তা-ই প্রযোজ্য হবে।’
নৈতিক ব্যবসায়ে অসামান্য সাফল্যের জন্য লতিফুর রহমান ২০১২ সালে ‘অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড’, ২০০১ সালে আমেরিকান চেম্বারের বিজনেস এক্সিকিউটিভ অ্যাওয়ার্ড, ২০১২ সালে ডেইলি স্টার-ডিএইচএলের বিশেষ পুরস্কার, ২০১৭ সালে সার্ক আউটস্ট্যান্ডিং লিডার অ্যাওয়ার্ড এবং যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান।