দেশের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রতি বছর বরাদ্দ বাড়ছে। তবে যাদের প্রয়োজন তাঁরা যতটা না পাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি পাচ্ছেন সেই মানুষেরা, যাঁদের প্রয়োজন কম। ভাতাগ্রহীতা নির্বাচনে ব্যাপক ভুলভ্রান্তি যেমন আছে, তেমনি দুর্নীতিও আছে। ফলে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আজ বুধবার ভার্চ্যুয়াল সংলাপে বক্তারা এই অভিযোগ করেন। দাতা সংস্থা অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও সিপিডির যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয় অনুষ্ঠানে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ব্যাপারে প্রশাসন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, জনপ্রতিনিধিরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন। সরকার মধ্যমেয়াদি সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করেছে। ফলে দেশে নীতিগত পরিসর ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে।
সরকার প্রতিবছর সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়ালেও তা এখনো পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। দেশের মানুষকে এখনো যত রকম বিপন্নতা ও ভঙ্গুরতার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করতে হয়, তাতে এসব বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। বাজার অর্থনীতি এই সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না, সেটি এখন বারবার সামনে চলে আসছে। তাঁর মত, এই পরিস্থিতিতে সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনা, পৃষ্ঠপোষকতার সংস্কৃতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে সামাজিক নিরাপত্তার বরাদ্দ সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছায় না।
মূলত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির পাঁচটি দিক মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রাথমিক স্কুল ও মাধ্যমিক স্কুল কর্মসূচি, অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি ও বয়স্ক ভাতা নিয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।
সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। এ ছাড়া নাগরিক সমাজ ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।