বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প—পাঁচ শ্রেণিতে ২০২০ সালের জন্য জাতীয় উৎপাদনশীলতা ও মান উৎকর্ষ পুরস্কার পেয়েছে দেশের ২৬টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে উৎপাদনশীলতা কার্যক্রমে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল রোববার বিকেলে বিজয়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
২০১২ সাল থেকে দেওয়া এই পুরস্কারের পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড কোয়ালিটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’। শিল্পকারখানায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও উৎপাদিত পণ্যের উৎকর্ষ অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) এই পুরস্কার দিয়ে থাকে। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো পুরস্কার দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহৎ শিল্পশ্রেণির খাদ্যশিল্প উপখাতে প্রথম হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজেস ও দ্বিতীয় হয়েছে হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো লিমিটেড। ইস্পাত ও প্রকৌশল উপখাতে পুরস্কার পেয়েছে ফেয়ার ইলেকট্রনিকস, শেলটেক (প্রা.) লিমিটেড ও রানার অটোমোবাইলস। বস্ত্র ও তৈরি পোশাক উপখাতে এনভয় টেক্সটাইলস, পাহাড়তলী টেক্সটাইল অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস ও করণী নিট কম্পোজিট পুরস্কৃত হয়েছে। সেবা উপখাতে নিটল ইনস্যুরেন্স, মীর টেলিকম ও ডিজিকন টেকনোলজিস পুরস্কার পেয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) উপখাতে পুরস্কার পেয়েছে সার্ভিস ইঞ্জিন। আর রাসায়নিক উপখাতে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস, কোহিনূর কেমিক্যাল ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে।
মাঝারি শিল্পশ্রেণিতে ইস্পাত ও প্রকৌশল উপখাতে একমাত্র পুরস্কার পেয়েছে সিলভান টেকনোলজিস। এ ছাড়া বস্ত্র ও পোশাক উপখাতে মাসকোটেক্স ও ইনডেক্স এক্সেসরিজ, তথ্যপ্রযুক্তি উপখাতে মিলেনিয়াম ইনফরমেশন সলিউশন এবং রাসায়নিক উপখাতে বিআরবি পলিমার লিমিটেড ও জিএমই অ্যাগ্রো পুরস্কার পেয়েছে।
অন্যদিকে ক্ষুদ্র শিল্পশ্রেণিতে আহমেদ ফুড প্রোডাক্টস, তোহফা এন্টারপ্রাইজ ও জারমার্টজ পুরস্কার পেয়েছে। অতিক্ষুদ্র (মাইক্রো) শিল্পশ্রেণিতে সুপার স্টার ইলেকট্রনিকস ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প শ্রেণিতে ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড পুরস্কার পেয়েছে। আর ইনস্টিটিউশনাল অ্যাপ্রিসিয়েশন পুরস্কার পেয়েছে ঢাকা উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
এনভয় টেক্সটাইলসের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমরা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সামনের সময়টা আমাদের জন্য আরও কঠিন হতে পারে। এ অবস্থায় গুণগত মানের পণ্য উৎপাদন করা গেলে রপ্তানি ও বাজারজাতকরণে কোনো সমস্যা হবে না।’
হবিগঞ্জ অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা বলেন, ‘বর্তমানে কনটেইনার ও ডলার সমস্যার কারণে আমাদের আমদানি-রপ্তানিতে ব্যাঘাত ঘটছে। তারপরও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশে ডলারের কোনো সংকট নেই। আমাদের অর্থমন্ত্রী বারবারই এ কথা বলেছেন। আমাদের দেশের একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী যেমনভাবে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন, তেমনভাবে একশ্রেণির অসাধু লোক ডলারের ব্যাপারে কারসাজি করছেন।’
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু ও এনপিওর মহাপরিচালক মুহম্মদ মেসবাহুল আলম।