১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন চায় রিহ্যাব, না হলে আন্দোলন

রিহ্যাবের লোগো

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন না করলে সদস্য ও জমির মালিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন শুরু করবে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

একই সঙ্গে এখন থেকে রিহ্যাব সদস্যরা বিদ্যমান বিধিমালা ২০০৮ ও বিএনবিসি ২০২০ অনুসারে নির্মাণ পরিকল্পনার আলোকে ভবন নির্মাণ করবেন। গতকাল রিহ্যাবের পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় রিহ্যাব নেতারা ড্যাপ ও বিধিমালা সংশোধনে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। খবর বিজ্ঞপ্তি।

রিহ্যাব নেতারা বলেন, বিধিমালা সংশোধনে রাজউকের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। রাজউক চেয়ারম্যান ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিহ্যাবের কাছ থেকে প্রস্তাব চান। রিহ্যাবের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিধিমালা সংশোধনের বিস্তারিত প্রস্তাব দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রিহ্যাব কথা রাখলেও বিভিন্ন সময় রাজউক বিধিমালা সংশোধনে একাধিকবার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে আবাসন খাতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বৈষম্যমূলক নতুন নিয়মে মালিকেরা উন্নয়নের জন্য জমি দিতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে ফ্ল্যাটের শূন্যতা তৈরি হচ্ছে এবং দ্রুত ফ্ল্যাটের দাম বাড়ছে। ফ্ল্যাট কেনার সক্ষমতা কমছে মানুষের।

সভায় রিহ্যাব প্রেসিডেন্ট মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন না হওয়ায় জমির মালিক, ডেভেলপারসহ সব শ্রেণির নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বাংলাদেশে জমির তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত না নিলে ভবিষ্যতে ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে। প্রতিবছর নতুন বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে কৃষি জমি কমছে। সে কারণে অবশ্যই বহুতল ভবন বানাতে হবে, ভবনের তলা বাড়াতে হবে।

রিহ্যাবের পরিচালকেরা বলেন, নির্মাণ খাতের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্ক আছে। এর সহযোগী শিল্প আছে। আবাসন শিল্পে স্থবিরতা বিরাজ করায় সেই শিল্পগুলো ধুঁকছে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে জিডিপিতে এই খাতের অবদান কমে যাবে। এ বিষয়ে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।

সভায় রিহ্যাব নেতারা বলেন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিকবার সভা হলেও সুরাহা হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন না করলে সব অংশীজনকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন শুরু ছাড়া আর কোনো পথ নেই। সরকারকে অবশ্যই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সভায় রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিচালকেরা উপস্থিত ছিলেন।

আবাসন ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ড্যাপে পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিত এলাকার জন্য পৃথকভাবে ভবন নির্মাণের যে ফ্লোর এরিয়া রেশিও বা এফএআর নির্ধারণ করা হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। নির্দিষ্ট কিছু সুবিধাভোগী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় এটা করা হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ এলাকায় আগে ভবনের যে আয়তন পাওয়া যেত, সে তুলনায় এখন ৬০ শতাংশ পাওয়া যাবে। এতে জমির মালিক ও ফ্ল্যাটের ক্রেতা-বিক্রেতা-সবাই ক্ষতির মুখে পড়বেন। শুধু তা–ই নয়, আশপাশের খাল-বিল, জলাশয় ও কৃষিজমি দ্রুত কমে যাবে।

আবাসন ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবাসন ব্যবসায়ীরা ড্যাপ কিংবা ইমারত নির্মাণ বিধিমালার বিরুদ্ধে নন। তবে কিছু সাংঘর্ষিক বিষয় আছে; সেগুলো সংশোধনের মাধ্যমে আবাসন খাতবান্ধব বিধিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।