বিশ্বের জনপ্রিয় আটটি রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড
বিশ্বজুড়েই ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর এখন মানুষের গৃহস্থালিতে দৈনন্দিন ব্যবহার্য একটি পণ্য। বাজারে চাহিদা থাকায় নিত্যনতুন নকশা ও গুণমানসম্পন্ন ফ্রিজ–রেফ্রিজারেটর উদ্ভাবন ও বাজারজাতকরণের পরিমাণও বাড়ছে। এর মধ্যে কিছু ব্র্যান্ড বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সে রকম আটটি ব্র্যান্ড নিয়ে এই উপস্থাপনা।
ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ড্রায়ারসহ বিভিন্ন হোম অ্যাপ্লায়েন্স তথা গৃহস্থালিতে দৈনন্দিন ব্যবহার্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের মতো রেফ্রিজারেটরও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। শহর–গ্রামনির্বিশেষে ঘরে ঘরে এখন ফ্রিজ–রেফ্রিজারেটর রয়েছে। খাদ্যদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্য শীতল রাখার পাশাপাশি বাহ্যিক নকশা, আকার, ধারণক্ষমতা এবং অবশ্যই দাম বিবেচনায় নিয়ে তবে ফ্রিজ-রেফ্রিজারেটর কিনতে হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পছন্দও বড় বিষয়।
তবে বৈশ্বিক চাহিদা, পছন্দ, গুণমান ও পরিসর—এসব বিবেচনায় কিছু ব্র্যান্ডকে সেরা বলে ধরে নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানভেদে শীর্ষ ১০ বা ৫ বা ৭ কি ৮ ব্র্যান্ড বাছাই করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস গত মাসে ‘দ্য বেস্ট রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। কয়েক মাস আগে সেই দেশের বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে সেরা আট রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডের নাম। এর আগে–পরে গ্লোবাল ব্র্যান্ডস ম্যাগাজিনসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এ ধরনের তালিকা প্রকাশ করেছে। এসব থেকে সেরা কিছু ব্র্যান্ড এখানে তুলে ধরা হলো।
ওয়ার্লপুল
বৈশ্বিক রেফ্রিজারেটরের বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক ব্র্যান্ড ওয়ার্লপুল একটি বিশ্বস্ত নাম। টেকসই ফ্রিজ হিসেবে এটি খুবই সমাদৃত। ওয়ার্লপুলের এনার্জি স্টার সার্টিফিকেশন ও প্যানোরামিক এলইডি লাইটিং সুবিধা রয়েছে। এই ফ্রিজ থেকে কার্বন নিঃসরণ কম হয় এবং এটি বেশ বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী। বিশেষ করে ওয়ার্লপুলের ফ্রিজগুলো তুলনামূলক পরিবেশবান্ধব ও বাজেটবান্ধব হিসেবে সর্বত্র জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
এলজি
রেফ্রিজারেটরের অত্যাধুনিক উদ্ভাবন ও বিপণনে দক্ষিণ কোরীয় এলজি ব্র্যান্ড বেশ পারদর্শী, যা এটাকে শীর্ষস্থানীয় ফ্রিজ ব্র্যান্ডের মর্যাদা দিয়েছে। এতে আইস মেশিন, এনার্জি স্টার সার্টিফিকেশন ও ইনস্টাভিউ প্রযুক্তির মতো সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলো রয়েছে। এই ফ্রিজের তাপমাত্রা বজায় রেখে খাদ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা খুবই ভালো। এলজি ফ্রিজের সব জায়গায়ই সমানভাবে বাতাস ছড়িয়ে পড়ে, যা ওয়াল প্যানেলগুলোয় শীতলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এরই ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ স্টোরেজ স্পেস বেশি হয়।
স্যামসাং
স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের মতো স্মার্ট ফ্রিজের জন্যও বিশ্বব্যাপী অন্যতম সমাদৃত একটি নাম স্যামসাং। এই ব্র্যান্ডের সেরা বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্যামিলি হাব প্রযুক্তি, যা ওয়াই–ফাইয়ের সঙ্গে সংযোগসম্পন্ন। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরীয় কোম্পানির তৈরি এই অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর মিউজিক প্লে ও ভিডিও স্ট্রিম করা এবং দোকানের তালিকায় বিভিন্ন আইটেম যোগ করার সুযোগ দেয়।
জিই
যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিক (জিই) ১৯২৫ সালে বাড়িতে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম রেফ্রিজারেটর চালু করে। তখন থেকে জিই রেফ্রিজারেটর খাদ্য শীতলীকরণ ও সংরক্ষণের গুণাবলির জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই ব্র্যান্ডের ফ্রিজ নিয়মিত জিই লাইন, মিনিমালিস্ট প্রোফাইল লাইন ও ক্যাফে লাইন মডেল হিসেবে বাজারে ছাড়া হয়।
বশ
জার্মানির বহুজাতিক রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ড বশ দীর্ঘদিন ধরেই বৈশ্বিক বাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। এটি খাবারকে দীর্ঘক্ষণ তাজা রাখে। এটি এমন প্রযুক্তিতে তৈরি, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখে এবং পুরো ফ্রিজে সমানভাবে বাতাস চলাচল করে। বশের তৈরি অত্যাধুনিক ফ্রিজ ওয়াই-ফাই ক্ষমতাসম্পন্ন, যা এর হোম কানেক্ট অ্যাপের সঙ্গেও কাজ করে। এই কোম্পানির অন্যতম বিখ্যাত ফ্রিজ হলো ৮০০ সিরিজ।
হিটাচি
বিশ্বজুড়ে গুণমানের জন্য হিটাচির রেফ্রিজারেটর বেশ জনপ্রিয়। তারা উন্নত বৈজ্ঞানিক নকশা ব্যবহার করে থাকে, যা ফ্রিজে রাখা খাবার থেকে ভিটামিন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিডের ক্ষতি রোধে সাহায্য করে। হিটাচির সেরা রেফ্রিজারেটরের মডেলের মধ্যে রয়েছে ফ্রেঞ্চ ডোর, ডবল ডোর ও ছয় দরজার মডেল। হিটাচির ফ্রিজ তাপ ও ওজন–প্রতিরোধী, পরিবেশবান্ধব।
কেলভিনেটর
যুক্তরাষ্ট্রের কেলভিনেটর রেফ্রিজারেটর বহু বছর ধরেই স্থায়িত্বের জন্য সুপরিচিত এক নাম। বছরের পর বছর বা এমনকি কয়েক দশক ধরে এই রেফ্রিজারেটরের কোনো রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না বলে মনে করা হয়। সে জন্য এটাকে গার্হস্থ্য ব্যবহারের জন্য একটি অন্যতম সেরা রেফ্রিজারেটর হিসেবে ধরা হয়। কেলভিনেটর রেফ্রিজারেটরে ভালো স্টোরেজ, মানে জায়গা পাওয়া যায়। এটি দারুণভাবে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে। কেলভিনেটর কোম্পানি এখন আর নেই। তবে কেলভিনেটর ব্র্যান্ডের নাম এখনো চালু রয়েছে। এই নামে পণ্য বাজারজাত করত ইলেকট্রোলাক্স নামের কোম্পানি।
প্যানাসনিক
জাপানি ব্র্যান্ড প্যানাসনিক সব ধরনের দামের রেফ্রিজারেটর বাজারজাত করে। এটিও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রেফ্রিজারেটর কোম্পানিগুলোর একটি। কিছু বৈশিষ্ট্য এটাকে বিশ্বের সেরা রেফ্রিজারেটর ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি করে তুলেছে। যেমন এলইডি টাচ কন্ট্রোল প্যানেল, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ, উচ্চতায় সামঞ্জস্যযোগ্য কাচের তাক ইত্যাদি। দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্যও প্যানাসনিক গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করেছে।