বাণিজ্য বৃদ্ধিতে ছয় শিল্প খাতে গুরুত্ব জাপানের
স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ২০৪১ সালের রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় জাপান। এ জন্য সম্ভাবনাময় ছয়টি শিল্প খাতকে চিহ্নিত করেছে তারা। দেশটি বলছে, উভয় দেশ সরকারি–বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে কাজ করলে এসব খাতে দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল রোববার বাংলাদেশ-জাপানের অর্থনৈতিক সম্পর্কের পরবর্তী ৫০ বছরে শিল্পের মানোন্নয়ন বিষয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
জাপানের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থা জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, সরবরাহ ব্যবস্থা, পরিবেশবান্ধব টেকসই জ্বালানি, ভারী শিল্প স্থাপন, চক্রাকার অর্থনীতি ও তথ্যপ্রযুক্তি—এই ছয় খাতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন সহযোগী হতে চায় জাপান। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে কৃত্রিম তন্তু দিয়ে উচ্চ মূল্যের পোশাক তৈরি ও পণ্যবৈচিত্র্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে জাপান। এ ছাড়া ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ বৈশ্বিক সরবরাহ খাতের অন্যতম কেন্দ্র হতে পারে বলে মনে করে জাপান। ফলে এই দুই খাতসহ মোট ছয়টি সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী দেশটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ও জেট্রোর সভাপতি কাজুশিজি নবুতানি প্রমুখ।
সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারকে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার অনুরোধ জানিয়েছেন জাপানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০০টির বেশি জাপানি কোম্পানি বিনিয়োগ করেছে। আরও অনেক কোম্পানি এখানে আসতে চায়। এ জন্য বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করা প্রয়োজন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, জাপান ভবিষ্যতে দেশের আরও অনেক বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) জন্য কাজ চলছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশে উৎপাদন খাতের সম্ভাবনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও স্টার্টআপ এবং জ্বালানি বিষয়ে পৃথক তিনটি অধিবেশনে আলোচনা করেন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) জমি ক্রয়, এসইজেডের পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা নীতি প্রণয়নে সহযোগিতার লক্ষ্যে তিনটি পৃথক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।