একে একে রিহ্যাবের আবাসন মেলার চার দিন হয়ে গেল। এই কদিনে মেলায় অংশ নেওয়া বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি জমি বা প্লটও বিক্রি হচ্ছে। কাল শুক্রবার মেলার শেষ দিনে বিক্রি বাড়বে—এমন প্রত্যাশা আবাসন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার দিনের প্রথমার্ধে মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল। তবে বিকেল থেকেই লোকসমাগম বেড়ে যায়। শেষ দিনে কালও সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করা যাবে। মেলায় ১৭০টি স্টল রয়েছে। তার মধ্যে ১৫০টি আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোর।
জানতে চাইলে রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই বছর পর আবাসন মেলা হচ্ছে। ফলে ক্রেতা–দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ভালো। বিক্রিবাট্টাও হচ্ছে।’ আবাসন খাত ঘুরে দাঁড়াবে কি না প্রশ্ন করা হলে লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, মেলার কারণে বিক্রি কিছুটা বাড়বে। তবে ড্যাপ সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত আবাসন খাতের ব্যবসার সামগ্রিকভাবে উন্নতি হবে না।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিপরীত পাশে সাড়ে ৬ হাজার বিঘা জমির ওপর প্লট প্রকল্প গড়ে তুলেছে প্রবাসী পল্লী গ্রুপ। ২০১১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রথম ধাপে আড়াই হাজার বিঘা জমির ভূমি উন্নয়নকাজের অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০০ প্লট হস্তান্তর হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে ৪ হাজার বিঘা জমিতে বালু ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ৩, ৫ ও ১০ কাঠার প্লট আছে। কাঠাপ্রতি দাম ৮ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা। মেলায় বুকিং দিলে ১০-২০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
এসব তথ্য দিয়ে প্রবাসী পল্লী গ্রুপের উপমহাব্যবস্থাপক মো. রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দেড় দশক ধরে ব্যবসা করছি। আশা করছি, বিক্রি আরও বাড়বে। মেলায় এখন পর্যন্ত ৪টি প্লট বুকিং হয়েছে।’ জমি কেনা নিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের বিভিন্ন ভোগান্তি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্লট হস্তান্তর করেছি। প্রকল্পের প্রথম ধাপে ২০১১ সালে প্রতি কাঠা আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন সেই জমির দাম বেড়ে ৩০ লাখ টাকা হয়ে গেছে।’
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে হাজী ক্যাম্প-সংলগ্ন দক্ষিণখানের কাওলায় ১ হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠছে আশিয়ান সিটি। এখানে ৩, ৫ ও ১০ কাঠা আয়তনের প্লট আছে। কাঠাপ্রতি দাম ৩০ লাখ থেকে ৮০ লাখ টাকা। প্রকল্পটিতে এখনই বাড়ি করার উপযোগী রেডি প্লট আছে। মেলায় বুকিং দিলে গ্রাহকদের অ্যাপলের ম্যাকবুক দেওয়া হয়। পাশাপাশি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় রয়েছে।
আশিয়ান গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আশিয়ান সিটির এ ও বি ব্লকের রাস্তাঘাট সম্পূর্ণ প্রস্তুত। সেখানে চাইলে এখনই ভবন নির্মাণ করা যাবে। সেখানকার প্লট বুকিংয়ে ৩০ শতাংশ অর্থ দিতে হয় বলে জানান তিনি।
এশিয়ান টাউন ডেভেলপমেন্ট তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এগুলো হচ্ছে—এশিয়ান ডুপ্লেক্স টাউন, পূর্বাচল এশিয়ান টাউন ও এশিয়ান শান্তি নিবাস। এগুলোর মধ্যে ২৩৭ বিঘার এশিয়ান ডুপ্লেক্স টাউন ও ১ হাজার ৭০০ বিঘার পূর্বাচল এশিয়ান টাউন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ১৮০ ফুট এশিয়ান হাইওয়ের পাশে অবস্থিত। আর ১ হাজার ৫৩০ বিঘার এশিয়ান শান্তি নিবাসের অবস্থান ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলা রেলস্টেশন-সংলগ্ন স্থানে।
পূর্বাচল এশিয়ান টাউনে ৩, ৫ ও ১০ কাঠার প্লট আছে। কাঠাপ্রতি দাম ১৮ লাখ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে মাওয়ায় এশিয়ান শান্তি নিবাসে ২.৫, ৩.৫ ও ১০ কাঠার প্লট আছে। কাঠাপ্রতি দাম ১৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা। ২০২৮ সালে প্রকল্প দুটি হস্তান্তর করা হবে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সাকিব হোসেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব হোসেন দাবি করেন, শান্তি নিবাসের ৮০ শতাংশ এবং রূপগঞ্জের প্রকল্পের ৬০-৭০ শতাংশ জমি তাঁদের কেনা। তিনি আরও বলেন, গ্রাহকেরা ৩৬ কিস্তিতে প্লট কিনতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে বুকিংয়ে ৩০ শতাংশ অর্থ দিতে হবে। মেলায় ইতিমধ্যে কয়েকটি প্লট বিক্রির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।