১০ বছর ধরে প্রশাসক দিয়ে চলছে যশোর চেম্বার, নির্বাচনের দাবিতে স্মারকলিপি

দ্রুত সময়ের মধ্যে যশোর চেম্বারের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। যশোর চেম্বারের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা আজ সোমবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কাছে এ বিষয়ে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাজনৈতিক প্রভাব ও আদালতে মামলা থাকার কারণে এক যুগ ধরে যশোর চেম্বারের নির্বাচন হয় না। ১০ বছর ধরে প্রশাসক নিয়োগ করে ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠনটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বর্তমান প্রশাসকের মেয়াদও বছরখানেক আগে শেষ হয়েছে। ফলে যশোরের ব্যবসায়ীরা এখন অভিভাবকশূন্য অবস্থায় আছেন। তাই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার মাধ্যমে সংগঠনটির অচলাবস্থা নিরসনের দাবি জানানো হয়।

জানা যায়, ২০১১ সালের ১৬ এপ্রিল যশোর চেম্বারের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে জেলা বিএনপির তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন প্যানেল জয়ী হয়। ২০১২ সালের ৩ মার্চ মিজানুর রহমান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি দায়িত্ব বুঝে পায়। ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী, ওই বছরের ১২ জুলাই ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই নির্বাচন ভেস্তে যায়। এরপর ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে প্রশাসক দিয়ে চলছে সংগঠনটির কার্যক্রম।

গত বছর ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ ও ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদ নামে দুটি প্যানেল ভোটে অংশ নিতে প্রচারণা শুরু করে। উভয় প্যানেলের প্রার্থীরা এক মাস ধরে প্রচার-প্রচারণাও চালান। কিন্তু নির্বাচনের দুই দিন আগে একজন ব্যবসায়ীর মামলার কারণে ওই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।

ওই মামলার অভিযোগে বলা হয়, ভোটার তালিকায় ৩০০ জনের অধিক ভোটারের হালনাগাদে কোনো আয়কর সনদ নেই। তাঁরা আয়কর সনদের মূল কপি দাখিল না করে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, যা বেআইনি। এসব অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিলে তা গ্রহণ না করায় আদালতে মামলা করেন ওই ব্যবসায়ী।

যশোর চেম্বারের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাবে ১২ বছর ধরে যশোর চেম্বারে ভোট হয়নি। নেতৃত্বশূন্যতায় এ জেলার ব্যবসা–বাণিজ্য গতি হারিয়েছে। গত বছর নির্বাচনের আগমুহূর্তে এক ব্যবসায়ীকে দিয়ে আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা মামলা করান। সভাপতি প্রার্থী থাকায় আমাকে পুলিশ নির্বাচনের আগেই গ্রেপ্তার করে।’

মিজানুর রহমান খান আরও বলেন, ‘চেম্বারে নিয়োগ দেওয়া সর্বশেষ প্রশাসকের মেয়াদও ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। তাই আমরা অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের একটা স্মারকলিপি পেয়েছি। যশোর চেম্বার কার্যকর করতে আইনগতভাবে যা যা করা দরকার, সবই করা হবে।’