১৫ জুলাই থেকে সারা দেশে নিটিং কারখানাগুলোয় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা

আজ শনিবার নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত বিকেওএর কার্যালয়ে আয়োজিত হয় এক বিশেষ জরুরি সভাছবি: সংগৃহীত

মজুরি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে ১৫ জুলাই (সোমবার) থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সুতা থেকে গ্রে থান কাপড় উৎপাদনকারী নিটিং কারখানা মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেওএ)।

আজ শনিবার নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত বিকেওএর কার্যালয়ে আয়োজিত এক বিশেষ জরুরি সভা থেকে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি সেলিম সারোয়ার। এ সময় তিনি সোমবার থেকে সারা দেশের গ্রে থান কাপড় উৎপাদনকারী নিটিং কারখানাগুলোয় কর্মবিরতি পালন তথা সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে বলে জানান। বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেওএ) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি জাতীয়ভিত্তিক সংগঠন।

এর আগে ১ জুন সংগঠনটির নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, এক কেজি সিঙ্গেল জার্সি কাপড় নিটিং (সুতা থেকে বুনন) করে তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ১৯ টাকা। অথচ সেখানে নিটিং মালিকদের মজুরি দেওয়া হচ্ছে ১৫ টাকা। তাই তাঁরা সুতা থেকে কাপড় বুননের মজুরি ২০ শতাংশ বাড়ানোর বিষয়ে পোশাক কারখানার মালিকদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু পোশাক কারখানার মালিকেরা বর্ধিত মজুরি না দেওয়ায় তাঁরা এখন অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাগুলোয় কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।

সভায় বিকেওএর সভাপতি সেলিম সারোয়ার বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানিনির্ভর কাঁচামালের দাম, ফ্লোর ভাড়া, শ্রমিকদের মজুরি, নিটিং মেশিনের অ্যাকসেসরিজের মূল্য, পরিবহন খরচ ও দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিটিং কারখানাগুলো চালিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি সুতা থেকে গ্রে থান কাপড় উৎপাদনের খরচ অনুযায়ী পোশাক কারখানার মালিকেরাও ন্যায্য মজুরি দিচ্ছেন না। পোশাকশিল্প মালিকদের অবহেলা ও অসহযোগিতার কারণে নিটিং কারখানাগুলো রুগ্‌ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা দেশে ৩০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

সেলিম সারোয়ার জানান, চলমান প্রায় আড়াই হাজার নিটিং কারখানায় আড়াই লক্ষাধিক শ্রমিক-কর্মচারী ও মালিকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সব নিটিং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১৫ জুলাই সকাল আটটা থেকে দেশের সব নিটিং ও কলার কারখানার সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

সভায় নিটিং মূল্যবৃদ্ধি ও বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান সহসভাপতি আবুল বাশার, কো-চেয়ারম্যান রকিবুল হাসান রকিব, সংগঠনের সহসভাপতি মিজানুর রহমান ও কামাল হোসেন, পরিচালকেরা ও বিকেওএর সাবেক সভাপতি মো. আবু তাহের শামীম উপস্থিত ছিলেন।