ঘোষিত মজুরি প্রত্যাখ্যান শ্রমিকদের একাংশের, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পোশাকশ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এই মজুরিকে ‘প্রহসনের প্রস্তাব’ আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিক সংগঠনগুলোর জোট ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’।
শ্রমিকদের এ জোট জানিয়েছে, ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবিতে তারা ১০ নভেম্বর সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশ করবে। ওই সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। জোটের পক্ষে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহকারী সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে পোশাক খাতের জন্য গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ষষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মালিকপক্ষ নতুন করে ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করে। আর আগেই এ বোর্ডে শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সভা শেষে মজুরি বোর্ডের পক্ষ থেকে মালিকপক্ষের প্রস্তাবই চূড়ান্ত মজুরি হিসেবে শ্রম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান সরকারের পক্ষে মজুরি বোর্ডের ওই প্রস্তাবই চূড়ান্ত মজুরি হিসেবে ঘোষণা দেয়।
সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত এ মজুরি তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে তা পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ‘মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’। জোটটি ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে।
এদিকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার পর বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সংগঠনটি। জোটের আহ্বায়ক তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব সাদেকুর রহমানের পরিচালনায় এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত পাঁচ বছরে শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতি ও বাজারের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ফলে যৌক্তিক নিয়মেই বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি করার কথা ছিল। কিন্তু বোর্ডের প্রস্তাব শ্রমিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।
গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা বলেন, মালিকপক্ষ সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি বর্তমান পরিস্থিতিতে টেনে এনেছে। সাড়ে ১২ হাজার টাকা মজুরি প্রস্তাব দেওয়ার মাধ্যমে শ্রমিকদের ক্ষোভকে আরও উসকে দেওয়া হয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব মালিকদের নিতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, সহসভাপতি জলি তালুকদার, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাসুদ রেজা, সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ওএসকে গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ইয়াসিন আলী, সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ ও বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম বক্তব্য দেন।