দুর্নীতির প্রশ্নে ‘জিরো টলারেন্স’ থাকবে: আদিলুর রহমান খান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, গণ-আন্দোলন ও অনেক মানুষের রক্তের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার ম্যান্ডেট (সমর্থন) নিয়ে তাঁরা দায়িত্বে এসেছেন। এ অবস্থায় দুর্নীতির বিষয়ে তাঁদের ‘জিরো টলারেন্স’ বা শূন্য সহনশীলতা থাকবে। এ ছাড়া সার কারখানায় পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহের মাধ্যমে সার উৎপাদনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আদিলুর রহমান খান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তাঁরা বলেন, বিভিন্ন সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা শোনা যায়, কাজ না করে বিল নিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে। এর জবাবে আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি, এসব অবশ্যই আমলে নেওয়া হবে।’
আদিলুর রহমান খান বলেন, জনগণের আন্দোলনে ও এত মানুষের রক্তের মধ্য দিয়ে তাঁরা দায়িত্বে এসেছেন। এখানে দুর্নীতির বিষয়ে কঠোর হওয়া ছাড়া উপায় নেই। অত্যন্ত কঠোর অবস্থান থেকে ছাত্র–জনতার রায় অনুযায়ী কাজ করে যাব। এখানে দুর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
শিল্প উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কোন কাজে অগ্রাধিকার দেবেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্যাসের কিছু সমস্যা আছে, ক্ষুদ্র শিল্পেও কিছু বিষয় আছে; এ ছাড়া কিছু পরিবেশবান্ধব কাজ, যেমন সাভারের চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণশিল্প ও জাহাজশিল্প খাতকে পরিবেশবান্ধব অবস্থায় আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করা হবে। আমরা প্রতিদিনই বসব এবং কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যা করা দরকার, তা করব।’
শিল্প মন্ত্রণালয় ও এর সংস্থাগুলোর প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ে শিল্প উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে আন্তমন্ত্রণালয় কিছু কাজ আছে, সেগুলো পর্যায়ক্রমে করা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের লোকসানি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সক্রিয় করতে কাজ করা হবে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা গেলে লোকসান কমে আসবে বলে আশা করছি।’
কয়েক মাস ধরে গ্যাস–সংকটের কারণে দেশের সার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে; ফলে সার আমদানি করতে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়—এ বিষয়ে শিল্প উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘গ্যাসের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে; এ বিষয়ে যত দূর করা সম্ভব হয়, আমরা করব। এটা আমরা অগ্রাধিকারের মধ্যে রেখেছি।’
দেশের দ্বিতীয় রপ্তানি খাত চামড়াশিল্পের বিদ্যমান সংকট কাটাতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা জানতে চান এক সাংবাদিক। এ প্রসঙ্গে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাতে আমাদের যেসব চ্যালেঞ্জ আছে, সমস্যা আছে; সেগুলো অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করব।’ এ বিষয়ে উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন। আপনারা জানেন, গ্যাসের প্রাপ্যতা না থাকায় ছয় মাস ধরে আমাদের সার কারখানাগুলো বন্ধ। শুধু ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া প্রকল্প এখন উৎপাদনে আছে। এ ছাড়া চামড়া শিল্পনগরীর বিষয়গুলো আছে; এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ঠিক করে আগামীকাল থেকেই পুরোদমে কাজ শুরুর জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন উপদেষ্টা।’