চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু করেছে সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটি)। আজ সোমবার মায়ের্সক লাইনের ‘এমভি মায়ের্সক দাভাও’ জাহাজে রপ্তানি কনটেইনার বোঝাই করে টার্মিনালটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বন্দরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিদেশি কোনো অপারেটর কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার কাজ শুরু করল।
মায়ের্সক লাইনের জাহাজটি পতেঙ্গা টার্মিনাল থেকে রপ্তানির ও খালি কনটেইনার নিয়ে ইন্দোনেশিয়ার বেলাওয়ান বন্দরের উদ্দেশে রওনা হবে। এরপর মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর হয়ে চীনের বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর আগে গত শনিবার জাহাজটি বন্দরের পুরোনো জিসিবি টার্মিনালের ৯ নম্বর জেটিতে ভেড়ানো হয়। সেখানে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার নামিয়ে আজ খালি জাহাজটি ভেড়ানো হয় পতেঙ্গা টার্মিনালে। এরপর জাহাজটিতে রপ্তানি কনটেইনার বোঝাইয়ের কাজ শুরু হয়।
টার্মিনালটির কার্যক্রম শুরু উপলক্ষে আজ এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল ও আরএসজিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরউইন হেইজ বক্তব্য দেন।
পতেঙ্গা টার্মিনালটি নির্মাণে বন্দরের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। সৌদি প্রতিষ্ঠানটি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনায় ১৭ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানিয়েছে। তবে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর মূল যন্ত্র গ্যান্ট্রি ক্রেন স্থাপন করতে দেড় বছরের বেশি সময় লাগতে পারে। তার আগে সনাতন পদ্ধতিতে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো শুরু হলো। এ জন্য ক্রেন আছে এমন জাহাজই ভেড়ানো যাবে এই টার্মিনালে।
উল্লেখ্য, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) আওতায় জিটুজি ভিত্তিতে টার্মিনালটি পরিচালনায় বন্দরের সঙ্গে সৌদি প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি হয় গত ৬ ডিসেম্বর। সরবরাহ, পরিচালনা ও হস্তান্তর ভিত্তিতে ২২ বছর মেয়াদে টার্মিনালটি পরিচালনা করবে সৌদি কোম্পানিটি। চুক্তি অনুযায়ী, এককালীন ও বার্ষিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবে বন্দর। এ ছাড়া সৌদি কোম্পানি কনটেইনার ওঠানো-নামানোর জন্য শিপিং কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যে মাশুল পাবে, তা থেকে বন্দর একটা অংশ পাবে।
পতেঙ্গা টার্মিনালটির অবস্থান ড্রাইডক ও বোটক্লাবের মাঝামাঝি। টার্মিনালটিতে একসঙ্গে তিনটি জাহাজ ভেড়ানোর সুবিধা রয়েছে। টার্মিনালটি চালু হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে টার্মিনালের সংখ্যা চারটিতে উন্নীত হয়েছে। অপর তিনটি হলো পুরোনো জিসিবি, সিসিটি ও এনসিটি। সারা দেশে আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের ৯৮ শতাংশই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা-নেওয়া হয়। নতুন টার্মিনালটি চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে সুবিধা বাড়ল।