ক্রেতাদের কাছে বিজিএমইএর চিঠি, ১ ডিসেম্বর থেকে পণ্যের নতুন মূল্য চায়
বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়েছে—আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনকে (এএএফএ) এই তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এএএফএর সভাপতি স্টিভেন ল্যামারের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, নতুন মজুরি বাস্তবায়নে ক্রেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে, সেই প্রত্যাশা করেন ফারুক হাসান।
চিঠিতে ফারুক হাসান বলেন, দেশের পোশাকমালিকেরা নতুন মজুরি বাস্তবায়ন করবেন। সে জন্য ক্রেতাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে যেসব পণ্য জাহাজিকরণ করা হবে, নতুন মজুরির আলোকে তার মূল্য সমন্বয় করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া এখন থেকে যত ব্যবসায়িক চুক্তি করা হবে, তা এই নতুন ন্যূনতম মজুরির সাপেক্ষে করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি।
স্টিভেন ল্যামারের প্রতি ফারুক হাসানের অনুরোধ, তিনি যেন এএএফএর সদস্যদের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেন, যেন তাঁরা যথাযথ একাত্মতার সঙ্গে বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের বিষয়টি বিবেচনা ও তাঁদের সহযোগিতা করেন।
চিঠিতে স্টিভেন ল্যামারকে জানানো হয়, পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বা ১১৩ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার। শ্রমিকদের মোট মজুরি বেড়েছে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। এবার শ্রমিকদের মূল মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে মোট মজুরির ৬৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। ফলে শ্রমিকদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়বে।
বিষয়টি সম্পর্কে বিজিএমইএ অবশ্য আগেই এএএফএকে অবহিত করেছিল। গত সেপ্টেম্বরে এক চিঠিতে বিজিএমইএ ডিসেম্বর থেকে যেসব পোশাক উৎপাদিত হবে, ক্রয়াদেশের বিপরীতে সেগুলোর দাম যৌক্তিকভাবে বাড়াতে মার্কিন ব্র্যান্ড ও ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিল।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত ২৭ জুলাই একটি চিঠি দেন এএএফএর সভাপতি স্টিভেন ল্যামার। সেই চিঠিতে তিনি শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে তিনি তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকের জন্য ন্যায্য মজুরি নির্ধারণেরও অনুরোধ জানান।
পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে প্রকৃত শ্রমিক প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের উন্মুক্ত সংলাপেরও দাবি জানিয়েছিল এএএফএ।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক, জুতা কোম্পানি ও তাদের সরবরাহকারীদের জাতীয় পর্যায়ের বাণিজ্য সংগঠন হচ্ছে এএএফএ। সংগঠনটি এক হাজারের বেশি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বছরে ৪৯০ বিলিয়ন বা ৪৯ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য বিক্রি করে থাকে।