সমঝোতায় আবারও বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান
নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএতে বছরের পর বছর নির্বাচন ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হচ্ছে। আর এ প্রক্রিয়ায় বারবার সভাপতি হচ্ছেন এ কে এম সেলিম ওসমান। এবারও এ নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি। নতুন করে আবারও দুই বছরের জন্য সভাপতি হয়েছেন তিনি। সেলিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্যও।
বিকেএমইএ আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সংগঠনটির ২০২৩-২৫ মেয়াদের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নতুন পর্ষদ গঠিত হয়েছে। সেলিম ওসমান টানা সপ্তম মেয়াদে সভাপতি হয়েছেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ হাতেম নির্বাহী সভাপতি ও মনসুর আহমেদ জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এবং ছয় সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলে শামীম এহসান, অমল পোদ্দার, গাওহার সিরাজ জামিল, মোরশেদ সারোয়ার, আখতার হোসেন ও মোহাম্মদ রাশেদ। এই ৯ পদের মধ্যে সহসভাপতি মোহাম্মদ রাশেদ ছাড়া বাকিরা বর্তমান কমিটিতেও রয়েছেন।
বিকেএমইএর পর্ষদ নির্বাচনের জন্য দুই মাস আগে নির্বাচন বোর্ড ও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ আলীকে। ৩৫ পরিচালক পদের জন্য আগামী ২৬ আগস্ট ভোট হওয়ার কথা ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩–২৫ মেয়াদের জন্য মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে ১৯ জুলাই বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের সব সদস্যকে ঢাকায় নিজের বাসভবনে ডাকেন সেলিম ওসমান। তার আগে তিনি সবাইকে বার্তা পাঠান, সভায় না এলে মনোনয়নবঞ্চিত থাকতে হবে। শেষ পর্যন্ত সভায় অনুপস্থিত থাকেন আসাদুল ইসলাম, হারুনূর রশীদ, কবীর হোসেন ও মোস্তফা জামাল পাশা। তাঁদের পরিবর্তে নতুন ৪ জনসহ ৩৪ প্রার্থীকে নিয়ে পরদিন অর্থাৎ ২০ জুলাই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সেলিম ওসমান।
তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত সোমবার। হঠাৎ সেটি এক দিন পিছিয়ে দেয় নির্বাচন বোর্ড। গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে মনোনয়নপত্র জমা দেন সেলিম ওসমানের নেতৃত্বাধীন প্যানেলের প্রার্থীরা। এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে সেই মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করে নির্বাচিত ৩৪ পরিচালকের তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন বোর্ড। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নির্বাচিত পরিচালকেরা সভাপতি, নির্বাহী সভাপতি এবং সাতজন সহসভাপতি নির্বাচিত করেন। এভাবেই অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে পুরো নির্বাচনের প্রক্রিয়া মাত্র কয়েক ঘণ্টা মধ্যে শেষ হয়।
দ্রুতগতিতে নির্বাচন সম্পন্ন হলেও এতে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি বলে দাবি করেন বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসান। আজ সন্ধ্যায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক পরিস্থিতি বর্তমানে অনুকূলে নয়। সে কারণে সময় নষ্ট না করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচনপ্রক্রিয়া শেষ করেছি আমরা।’
একজন প্রার্থীর পদ শূন্য কেন জানতে চাইলে ফজলে শামীম এহসান বলেন, মামুনূর রশীদ নামের এক প্রার্থী হঠাৎ তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে চলে যান। সে কারণে তিনি উপস্থিত থেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। পরে এই পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বিকেএমইএর সভাপতির পদে আছেন সেলিম ওসমান। সর্বশেষ ২০১২ সালে ভোটের মাধ্যমে সভাপতি হন তিনি। পরের সব মেয়াদেই সমঝোতার মাধ্যমে সভাপতি হন সেলিম ওসমান।
এদিকে বিকেএমইএর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নতুন ২৫ পরিচালক হলেন মঞ্জুরুল হক, আবু আহমেদ সিদ্দিক, মো. শামসুজ্জামান, মোস্তফা মনোয়ার ভূঁইয়া, আশিকুর রহমান, শ্যামল কুমার সাহা, সাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, তারেক আফজাল, রাজীব দাস, এম আই সিদ্দিক, রতন কুমার সাহা, নন্দ দুলাল সাহা, মির্জা আকবর আলী চৌধুরী, আহমেদ নূর ফয়সাল, আব্দুল হান্নান, ইমরান কাদের, ফকির কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ শামসুল আজম, আক্কাস উদ্দিন মোল্লা, মোহাম্মদ জাকারিয়া ওয়াহিদ, লুৎফর রহমান, মো. মিনহাজুল হক, ফওজুল ইমরান খান ও খোরশেদ আহমেদ।