পাইকারিতে কমেছে সবজির দাম, খুচরায় দাম এখনো চড়া

সবজি বাজারফাইল ছবি

উৎপাদন এলাকাখ্যাত বগুড়ার মহাস্থান হাটে এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম ছিল ৩০০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই দাম প্রায় অর্ধেক কমেছে। গত শুক্রবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকায়।

শুধু কাঁচা মরিচ নয়, মহাস্থান হাটে সব ধরনের সবজির পাইকারি দাম কমেছে। তবে খুচরায় দাম এখনো চড়া। বগুড়ায় খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। শুক্রবার সকালে মহাস্থান হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটভরা সবজির পসরা নিয়ে বসেছেন চাষিরা। প্রায় দুই সপ্তাহ পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সবজির এই বড় মোকাম। দূরদূরান্ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে।

চাষি ও পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহাস্থান হাটে শুক্রবার প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুনের দাম ছিল ২২ টাকা। এ ছাড়া পটোল ২০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ২৫ টাকা, করলা ৫৫ টাকা, মুলা ২৫ টাকা, পেঁপে ১৮ টাকা, কচুমুখি ৪৫ টাকা, লাউ প্রতিটি ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৩২ টাকায় বিক্রি হয়। দেশি লাল আলু প্রতি কেজি ৪৯ টাকা ও সাদা আলু ৪৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১১৫ টাকা, আদা ২২০ টাকা, রসুন ২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এদিকে মহাস্থান হাটে শুক্রবার পাইকারিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা বিক্রি হলেও এক হাত বদলের পর বগুড়া শহরের ফতেহ আলী খুচরা বাজারে দাম ছিল ২৪০ টাকা। এ ছাড়া মহাস্থান হাটের ২২ টাকা কেজির বেগুন ফতেহ আলী বাজারে ৭০ টাকা, ২০ টাকা কেজির পটোল ৪০ টাকা, ৪০ টাকা দামের কাঁকরোল খুচরায় ৭০ টাকা, ২৫ টাকা কেজির ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, ৫৫ টাকার করলা ১২০ টাকা, ২৫ টাকার মুলা ৫০ টাকা কেজি, ১৮ টাকার পেঁপে খুচরায় ৪০ টাকা, ৪৫ টাকা কেজির কচুমুখি ৮০ টাকা, ৩০ টাকা দরের প্রতিটি লাউ খুচরায় ৫০ টাকা, ৩২ টাকার মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা কেজি, ৪৯ টাকা কেজির লাল আলু ৬৫ টাকা ও ৪৪ টাকা কেজির সাদা আলু খুচরায় ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৩০, আদা ৩০০ ও রসুন ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

মহাস্থান হাট কাঁচা ও পাকা মাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, কারফিউ জারির পর সবজির সরবরাহ অস্বাভাবিক কমে যায়। এ ছাড়া বাজারঘাট বন্ধ থাকায় ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, ফেনীসহ বড় বড় মোকামে সবজির চাহিদা কমে যাওয়ায় সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ট্রাকভাড়াও বেড়ে দ্বিগুণ হয়। তবে পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় সরবরাহ বেড়েছে। তাতে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। এক সপ্তাহ আগে মহাস্থান হাটে যেখানে ৩ থেকে ৪ ট্রাক সবজি বিক্রি হয়েছে, সেখানে শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ ট্রাক। ট্রাকভাড়াও কমে গেছে।

পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরায় তার প্রভাব পড়েনি। জানতে চাইলে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন,পাইকারি পর্যায়ে সবজির দাম কমার পর খুচরা পর্যায়ে দাম কমতে কয়েক দিন সময় লাগে।

বগুড়ার রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, কয়েক দিন ধরে বাজার সরকারি কোনো তদারকি নেই। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা বাজার তদারকি শুরু করেছেন। শিক্ষার্থীদের এই তদারকি থাকলে দাম আরও কিছুটা কমতে পারে।