ভরা মৌসুমেও চড়া সবজির দাম
গত দু-তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। চাল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য স্থিতিশীল।
দেশজুড়ে কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে মাঠ থেকে ফসল তুলতে সমস্যায় পড়ছেন কৃষকেরা। আর ঘন কুয়াশার কারণে সবজি পরিবহনও ব্যাহত হচ্ছে। তাতে ঢাকার বাজারে শীতের সবজি আসছে কম। ভরা মৌসুমেও গত দু-তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। মাছ ও আদা-রসুনের দামও একটু বাড়তি। আর চাল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য স্থিতিশীল।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর পলাশী বাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, কাঁঠালবাগান ও রাজাবাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দু-তিন দিনের ব্যবধানে নতুন করে সবজির দাম বেড়েছে। তাতে এখন বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকা, শিম ও টমেটো ৫০-৬০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, গাজর ও শসা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঝিঙে, ধুন্দল ও চিচিঙ্গার কেজিপ্রতি দাম রাখা হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। গত সপ্তাহেও এসব সবজির কেজি ৫০-৬০ টাকার মধ্যে ছিল।
এদিকে প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম পড়ছে ৪০-৫০ টাকা। আর বড় আকারের প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। খুচরায় এক কেজি কাঁচা মরিচ কিনতে হলে গুনতে হচ্ছে ১২০ টাকার ওপরে। মানভেদে নতুন আলুর দাম পড়ছে ২০-৩০ টাকা কেজি।
গত কয়েক দিনে অন্তত ৩০ শতাংশ সবজির ট্রাক কম এসেছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ কাঁচামাল আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইমরান মাস্টার প্রথম আলোকে বলেন, এই সময়ে সবজির দাম কম থাকে। তবে কয়েক দিন আবহাওয়া একটু বৈরী। তাতে দাম একটু বাড়তি। উৎপাদন খরচও বেশি। তবে সরবরাহ বেড়ে গেলে দাম দ্রুত কমে যাবে।
এদিকে কেজিতে ১০-৩০ টাকা বেড়েছে পাঙাশ, তেলাপিয়া ও রুই মাছের দাম। তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি ১৮০-২০০ টাকা নিচে মিলছে না। রুই মাছের দাম মানভেদে ২৫০-৪০০ টাকা কেজি।
পলাশী বাজারের মাছ বিক্রেতা মো. হারুন প্রথম আলোকে বলেন, শীতের কারণে চাষের মাছ বাজারে কম আসছে। তাতে মাছের দাম বাড়ছে। তবে এটা দীর্ঘ মেয়াদে থাকবে না। দ্রুত কমে আসবে।
ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৫০-২৭০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে। ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন এখন ১১০-১২০ টাকা। গরুর মাংস ৬৮০-৭০০ ও খাসির মাংস মানভেদে ৯০০-১০০০ টাকা কেজি।
এদিকে মোটা চালের দাম একটু কমে ৫০ টাকার নিচে নামলেও, অন্যান্য চাল আগের দামেই কিনতে হচ্ছে। বাজারে চিনির দাম এখনো তেতে আছে। ১১৫-১২০ টাকার নিচে চিনির কেজি পাওয়া যাচ্ছে না। প্যাকেটজাত ও খোলা আটার দামেও বড় পরিবর্তন নেই।
বাজারে মোটা, মাঝারি ও সরু মসুর ডাল কেজি ১০০-১৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকা। পেঁয়াজের দাম নাগালের মধ্যেই আছে। ৫০ টাকার মধ্যে নতুন ও পুরোনো উভয় পেঁয়াজ মিলছে। তবে আদা ও রসুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বাড়তি। দেশি ও আমদানি করা রসুনের কেজি ১২০-১৫০ টাকা। আর আদার কেজি ২৫০ টাকার মধ্যে।
নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে সদাই করতে আসা আসফিয়া পারভিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজার খরচ গত বছর হু হু করে বেড়েছে। এ বছর বড় দাগে কিছু না বাড়লেও, দাম একটারও কমেনি। এতে সংসার সামলাতে কষ্ট হচ্ছে। নানাভাবে কাটছাঁট করে চলতে হচ্ছে।’