শেয়ার বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবেন আদানি
আদানি গোষ্ঠীর নিট ঋণের পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। অনেক দিন ধরেই এ ঋণ নিয়ে সংশয় আছে বিশ্লেষকদের মধ্যে, অর্থাৎ এত পরিমাণ ঋণ নিয়ে আদানি গোষ্ঠী কতটা টেকসই, তা নিয়ে।
হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও আদানি গোষ্ঠী বরাবরই জোর গলায় বলে আসছে, এ ঋণ বড় সমস্যা নয়। পরিশোধ করার সক্ষমতা তাদের আছে। কিন্তু ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক সংবাদে জানা গেল, আম্বুজা সিমেন্টের ৪৫ কোটি ডলারের শেয়ার বিক্রি করে ঋণ কমানোর চিন্তা করছে আদানি গোষ্ঠী।
এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে জানিয়েছেন, আদানি গোষ্ঠী আম্বুজা সিমেন্টের ৪ থেকে ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করতে চায়। তা কিনতে বিনিয়োগকারীদের অনুরোধ করেছেন গৌতম আদানি। আম্বুজা সিমেন্টের ৬৩ শতাংশ শেয়ার আদানি গোষ্ঠীর।
তবে এ শেয়ার কারা কিনতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি আদানি গোষ্ঠী। এ ছাড়া পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়নি। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আরেক ব্যক্তি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তা নিশ্চিত করেছেন।
এ খবর নিশ্চিত হলে বলা যায়, আদানি গোষ্ঠী এই প্রথম সম্পদ বিক্রি করে দেনা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে।
আদানি গোষ্ঠী নিজেদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেছে। আর সে লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক নামী জনসংযোগ সংস্থা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কেক্সট সিএনসি নামের ওই সংস্থা এর আগেও অনেক কোম্পানিকে খাদ থেকে টেনে তুলেছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে তারা বেশ নামও করেছে। তারা এখন আদানিদের ‘ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের’ দায়িত্ব নিয়েছে। কেক্সট নাকি বেশ দক্ষতার সঙ্গে কাজও শুরু করে দিয়েছে। তবে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কেক্সট বা আদানিদের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
এ ছাড়া বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে পেতে বিভিন্ন কোম্পানির ঋণ আগাম পরিশোধ করতে শুরু করেছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন কোম্পানি। আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড গত মাসেই এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ডের কাছে বকেয়া ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এ মাসে আরও এক হাজার কোটি রুপির ঋণ পরিশোধ করবে তারা।
আদানি গোষ্ঠীতে সুশাসনের অভাব
গবেষণা সংস্থা এমএসসিআই ইএসজি রিসার্চ শুক্রবার বলেছে, তারা সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর পরিবেশ, সামাজিক ও সুশাসন সম্পর্কিত মূল্যায়ন পরিবর্তন করেছে। এ মাসেই হিনডেনবার্গ সম্পর্কিত বিতর্কের ঘটনায় তারা আদানি গোষ্ঠীর কয়েকটি কোম্পানির মূল্যায়ন ‘মাইনর’ থেকে ‘মডারেট’ করেছে। তবে সামগ্রিকভাবে এসব কোম্পানির মূল্যায়নে পরিবর্তন আসেনি বলে জানিয়েছে তারা।
এ মূল্যায়ন পরিবর্তনের কারণে বিনিয়োগকারীরা প্রভাবিত হবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে আদানি গোষ্ঠী যথারীতি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।