নওয়াপাড়া থেকে রেলপথে সার যাচ্ছে নেপালে

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ থেকে রেলপথে সরাসরি ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার যাচ্ছে নেপালে। চীন থেকে আমদানি করা এই সার যশোরের নওয়াপাড়া রেলস্টেশন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার রাজ্য হয়ে পণ্যবাহী ট্রেনে নেপালে পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১৫ হাজার মেট্রিক টন সার নেপালে পাঠানো হয়েছে।

ট্রানজিটের আওতায় বাংলাদেশ ও ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপালে সার পাঠিয়েছে ঢাকাভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দেশ ট্রেডিং করপোরেশন। এ নিয়ে নেপাল সরকারের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি হয়েছে। বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ১৯৭৬ সালে দ্বিপক্ষীয় ট্রানজিট ও প্রটোকল চুক্তি হয়। চুক্তিটির আওতায় নেপালকে ছয়টি বন্দর থেকে যানবাহনে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বন্দরগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর এবং বেনাপোল, বাংলাবান্ধা, বিরল ও চিলাহাটি স্থলবন্দর। এর মধ্যে বাংলাবান্ধা ছাড়া আর কোনো বন্দর দিয়ে নেপালে নিয়মিত পণ্য আনা-নেওয়া করা হতো না। ২০১৮ সালের ৩০ মে থেকে ১ জুন নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত দুই দেশের বাণিজ্যসচিব পর্যায়ের বৈঠকে নেপাল রোহনপুর থেকে পোর্ট অব কল, অর্থাৎ যানবাহনে পণ্য পরিবহনের সুযোগ চায়। এরপর ২০২০ সালের ১০ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন এই ট্রানজিট পথের খসড়া অনুমোদন করা হয়।

ট্রানজিটের আওতায় রেলপথে দুই উপায়ে বাংলাদেশ থেকে নেপালে সরাসরি পণ্য পরিবহন হয়। এর একটি হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর-ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহের সিঙ্ঘাবাদ-বিহারের জগবানি-নেপালের বিরাটনগর, আর অন্যটি হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের রোহনপুর-পশ্চিমবঙ্গের বিরল-রাধিকাপুর-বিহারের রক্সল-নেপালের বীরগঞ্জ।

২০০৪ সালে ভারতের সিঙ্গাবাদ থেকে নেপালের বিরাটনগর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ চালু হয়। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ অংশে ব্রডগেজ রেলপথ চালু হওয়ার ফলে সরাসরি নেপালের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের সুযোগ তৈরি হয়।

রেলওয়ের নওয়াপাড়ার স্টেশনমাস্টার মো. মহসিন রেজা বলেন, নওয়াপাড়া থেকে এবার ২৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ডিএপি সার নেপালে পরিবহন করা হবে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন পরিবহন করে প্রায় ৯২ লাখ টাকা আয় হয়েছে। অবশিষ্ট সাড়ে ১৪ হাজার মেট্রিক টন সার পাঠিয়ে রেলের আরও ৮৫ লাখ টাকা আয় হবে।
দেশ ট্রেডিং সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে তারা নওয়াপাড়া থেকে নেপালে ৬২ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন ডিএপি সার সরবরাহ করেছিল। সেই সুবাদে ওই বছর বাংলাদেশ রেলওয়ে ২ কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার টাকা আয় করেছিল। ২০১৮ সালেও দেশ ট্রেডিং ২৫ হাজার ৩৭৭ মেট্রিক টন সারা পাঠায়। তাতে রেলওয়ের আয় হয় ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

দেশ ট্রেডিং করপোরেশনের নির্বাহী ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান খান বলেন, ‘নেপাল সরকারের ডাকা সার ক্রয়ের আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিয়ে আমরা এবার ২৯ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ডিএপি সার সরবরাহের অনুমোদন পেয়েছি। চুক্তির পর চীন থেকে সার আমদানি করা হচ্ছে।’