২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

গোপনে শেয়ার বেচে দিচ্ছে ব্রোকারেজ হাউস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকেরও টাকা আত্মসাৎ করেছে তামহা সিকিউরিটিজ। আত্মসাৎ হওয়া অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা।

দুই বছরে চার ব্রোকারেজ হাউসে ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ

  • তামহা সিকিউরিটিজ ১৩৯ কোটি টাকা ৭০ লাখ টাকা।

  • ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ ৮০ কোটি টাকা।

  • বাংকো সিকিউরিটিজ ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

  • শাহ মোহাম্মদ সগীর ১৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

  • বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত ৫ জানুয়ারি হারুনুর রশীদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ১০টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।

  • ৮ ফেব্রুয়ারি পাওনাদার ২২ গ্রাহককে টাকা ফেরত দিতে ডিএসইর কাছে এক কোটি টাকার চেক দিয়েছে তামহা সিকিউরিটিজ।

  • ক্রেস্ট সিকিউরিটিজে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব ছিল। গ্রাহকদের টাকা ছিল ১০০ কোটি।

  • ব্লু চিপস সিকিউরিটিজ, ডন সিকিউরিটিজ, সিলেট মেট্রো সিটি সিকিউরিটিজ, ট্রেন্ডসেট সিকিউরিটিজ এবং মোহররম সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

ঢাকার শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের হেলথ ক্লাব ভবনের তৃতীয় তলাটি একসময় খুব সরগরম ছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউস তামহা সিকিউরিটিজের একটি শাখা রয়েছে সেখানে। ব্রোকারেজ হাউসটির প্রধান কার্যালয় মতিঝিলের ডিএসই ভবনের ৫০১ নম্বর কক্ষে। অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির দুটি কার্যালয়ই বন্ধ।

ইন্টারকন্টিনেন্টালে শাখাটি খোলা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং বারডেমের চিকিৎসক-কর্মচারীদের শেয়ার কেনাবেচায় আকৃষ্ট করতে। আকৃষ্টও হয়েছিলেন তাঁরা।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, দুই মেয়াদে আট বছর শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হওয়ার আগে এম খায়রুল হোসেন নিজে তামহা সিকিউরিটিজের ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখাতেই শেয়ার কেনাবেচা করতেন। চেয়ারম্যান হওয়ার সবুজ বার্তা পাওয়ার আগে তিনি সব শেয়ার বেচে দিয়ে ওই ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবের খাতা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। খায়রুল হোসেন শেয়ারবাজার নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বেসিক ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল হাশেমও কয়েক বছর আগেই তামহা সিকিউরিটিজ থেকে হিসাব বন্ধ করে বিদায় নিয়েছেন। সময়মতো বেরিয়ে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক নুরুল আমিন বেপারীও।

তবে আটকে গেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক আলী আক্কাস, প্রাণরসায়ন বিভাগের শিক্ষক মামুন আহমেদ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানসহ অনেক শিক্ষক ও কর্মচারী।

কর্মস্থল থেকে হাঁটাপথ ছিল বলে তামহা সিকিউরিটিজের ইন্টারকন্টিনেন্টাল শাখায় লেনদেন করতেন বলে জানান ঢাবি শিক্ষক আলী আক্কাস। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটিতে তাঁর ৬০ লাখ টাকা আটকে গেছে। আরেক শিক্ষক মামুন আহমেদ বলেন, ব্রোকারেজ হাউস যে এভাবে শেয়ার বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণাই ছিল না তাঁর।

তামহা সিকিউরিটিজের জালিয়াতির ঘটনায় ৮০ লাখ টাকা খোয়ানো ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার দিনই বুঝতে পারলাম যে আমার সব শেষ।’

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ঢাবির ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার বিশ্বাস, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দুই সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন ও রঞ্জন কুমার মিত্রসহ বিএসএমএমইউ এবং বারডেমের চিকিৎসকদেরও অনেকের অর্থ আটকে গেছে তামহা সিকিউরিটিজে।

ব্রোকারেজ হাউসটিতে অর্থ আটকে যাওয়াদের একাংশ ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চিকিৎসক মো. হারুনুর রশীদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দুই হাজার বিনিয়োগকারীর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন হারুনুর রশীদের স্ত্রী রহিমা সুলতানা এবং দুই বোন জাহানারা বেগম ও শাহনাজ বেগম। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএসএমএমইউর উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা মো. আবু তাহিরের ছেলে হারুনুর রশীদ ঢাকার ডেল্টা হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক।

তামহা সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হারুনুর রশীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য তাঁর মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রীর বোনের স্বামী সিনহা এস এ সাইদ বলেন, হারুনুর রশীদ এখন কারও সঙ্গেই পারতপক্ষে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না।

তবে ৮ ফেব্রুয়ারি তামহা সিকিউরিটিজের এমডি হারুনুর রশীদ ডিএসইর কাছে ১ কোটি টাকার একটি চেক পাঠিয়েছেন। ছোট ছোট অঙ্কের পাওনাদার ২২ জন গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে তিনি এ চেক পাঠান বলে ডিএসই সূত্রে জানা গেছে।

ডিএসইর ৮১ নম্বর ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেটধারী (ট্রেকহোল্ডার) তামহা সিকিউরিটিজ ১৩৯ কোটি টাকা ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে বিএসইসির এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে ওঠে আসে। অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে গত ২৮ নভেম্বর ব্রোকারেজ হাউসটির শেয়ার কেনাবেচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় ডিএসই। গত ২ ডিসেম্বর ডিএসই মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে, যার দুই দিন পর অভিযোগটি আমলে নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুর্নীতির সঙ্গে তামহা সিকিউরিটিজের কিছু কর্মচারীও জড়িত-এ তথ্য উল্লেখ করে আলোচনার জন্য প্রতিষ্ঠানটির এমডি হারুনুর রশীদকে ৭ ডিসেম্বর ডিএসইতে ডাকা হলেও তিনি যাননি। এরপর ৯ ডিসেম্বর তামহার ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) লাইসেন্স বন্ধ করে দেয় ডিএসই। পাশাপাশি বিএসইসির অনুরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত ৫ জানুয়ারি হারুনুর রশীদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ১০টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।

এ বিষয়ে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া গত ১৯ জানুয়ারি এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্রোকারেজ হাউসগুলো যাতে অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারে, সে ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এর বেশি কিছু জানতে চাইলে তিনি প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) এম সাইফুর রহমান মজুমদারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘কোভিড-১৯ আসার পর অনেক ছোট ব্রোকারেজ হাউস যে ব্যবসা করতে পারেনি, সেটাও দেখতে হবে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে কেউ কেউ গোপনে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি দিয়েছে। আমরা একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেব না।’

একই কাজে আরও ব্রোকারেজ হাউস

গত বছরের জুনে বাংকো সিকিউরিটিজের কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয় অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে। মতিঝিলের ইস্পাহানি ভবনের চতুর্থ তলায় ব্রোকারেজ হাউসটির কার্যালয়। বিএসইসির তদন্ত অনুযায়ী, এ ব্রোকারেজ হাউসের মালিকপক্ষ গ্রাহকদের ৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ঘটনায় ডিএসই মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডিও করে। পরে দুদক প্রতিষ্ঠানটির ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছে। আসামিরা হলেন বাংকো সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান আবদুল মুহিত এবং পরিচালক শফিউল আজম, ওয়ালিউল হাসান চৌধুরী, নুরুল ঈশান সাদাত, এ মুনিম চৌধুরী ও জামিল আহমেদ চৌধুরী।

দুদকের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে দেশ ছাড়তে গেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবদুল মুহিতকে আটক করা হয় ২০২১ সালের ২১ জুন। অনেক গ্রাহকের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক আবু আহমেদও এ ব্রোকারেজ হাউসে লেনদেন করতেন। আবু আহমেদ বলেন, টাকার বড় অংশ পেয়ে গেছেন। তবে অন্য সবাই বিপদে আছেন।

একই অভিযোগ আরেক ব্রোকারেজ হাউস ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের জুনে ডিএসইর এক তদন্তে উঠে আসে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ গ্রাহকের ৮০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে। ৫৭ পুরানা পল্টনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির এমডি মো. শহিদ উল্লাহ ও তাঁর স্ত্রী নিপা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর হিসাব ছিল এই হাউসে। আর গ্রাহকদের টাকা ছিল ১০০ কোটি। শেয়ার কেনাবেচার বাইরে বেআইনিভাবে লভ্যাংশের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকাও নিতেন তাঁরা। মালিকপক্ষ ১৮ কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজেদের ব্যাংক হিসাবে।

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের গ্রাহক মো. নিশাত ওই বছরের ২৫ জুন রমনা মডেল থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, তাঁকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়। গ্রাহকের টাকা মালিকপক্ষ সরিয়ে নিয়েছে। এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সাজ্জাদ হোসেনের দুটি হিসাব থেকে ১ কোটি ৬৯ লাখ, নাজির আহমেদের ১ কোটি ৩৫ লাখ, জাহাঙ্গীর আলমের ১৫ লাখ, নাছিমা আক্তারের ২২ লাখ, সুব্রত কুমারের ১৬ লাখ, সোহেল আহমেদের ১০ লাখ, আমিনুর রহমানের ৭ লাখ, রাহাত তানভীরের ৩ লাখ ৭৩ হাজার; জাকির হাওলাদারের ৩০ লাখ টাকা সরিয়ে নেয় ব্রোকারেজ হাউসটির মালিকপক্ষ।

এদিকে ডিএসইর সদস্যভুক্ত শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি গ্রাহকের ১৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠানটির অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়ার পর সেটির লেনদেনের সনদ স্থগিত করে ডিএসই। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, প্রাচীন কবি শাহ মুহম্মদ সগীর নামটিকেই অপমানিত করেছেন শেয়ারবাজারের শাহ মুহাম্মদ সগীর।

আরও অভিযোগের তির

একই ধরনের অভিযোগ ব্লু চিপ সিকিউরিটিজের (সাবেক খুরশিদ সিকিউরিটিজ) বিরুদ্ধেও। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আনন্দনগরের বাসিন্দা রিজিয়া খাতুন গত ১১ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে লিখিত আবেদনে বলছেন, তাঁর স্বামী আহমেদ আলীর ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার ছিল এই ব্রোকারেজ হাউসে। কিন্তু তাঁর অজান্তে হাউসটি তাঁর সব শেয়ার বেচে দেয়। ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ব্লু চিপ, বিএসইসি ও ডিএসইতে আবেদন করে প্রতিকার চাইলেও কিছু হয়নি।

এ বিষয়ে ব্লু চিপ সিকিউরিটিজের এমডি মুজিবুর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ইমেইল বার্তা পাঠিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

২০১৮ সালের শুরুর দিকে মারা যান আহমেদ আলী। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে ব্লু চিপ ৮৯ লাখ টাকা দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় রিজিয়া খাতুনকে। পৌনে দুই বছর পর ২০১৯ সালের নভেম্বরে তারা স্বীকার করে যে আপাতত ৫৫ লাখ টাকা দেবে, পরে দেবে আরও ১৮ লাখ টাকা। আর ২০২০ সালের আগস্টে রিজিয়া খাতুনকে ৫৫ লাখ টাকার একটি চেক দেয় ব্লু চিপ। ব্যাংকে চেক জমা দিলে টাকা না থাকায় ফেরত আসে। তিনি পরে ব্লু চিপের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেন, যা এখনো চলছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বলেন, ‘এগুলো দেখার প্রধান দায়িত্ব স্টক এক্সচেঞ্জের। তারা কিছু জানালে বিএসইসি দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। আর যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে স্টক এক্সচেঞ্জ কাজ করছে, বিএসইসিও তৎপর।’

এ ছাড়া ডন সিকিউরিটিজ, সিলেট মেট্রো সিটি সিকিউরিটিজ, ট্রেন্ডসেট সিকিউরিটিজ এবং মোহররম সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ২০০৫-০৬ সালেও একই ধরনের অনিয়মের কারণে ডিএসই ক্যাপিটাল রুপস, জেআর ক্যাপিটাল কোম্পানি, এমআর কোম্পানি, টি মুশফু অ্যান্ড কোম্পানি এবং এসপিএম লিমিটেড—এই পাঁচটির কার্যক্রম বন্ধ করেছিল।

বিএসইসির চেয়ারম্যানের বক্তব্যটি জানালে তার প্রতি আস্থা রাখতে রাজি হননি প্রতারণার শিকার কয়েকজন বিনিয়োগকারী। আবু তাহের নামের একজন বিনিয়োগকারী গতকাল বলেন, মূল সমস্যা ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের সিন্ডিকেটে। তাদের অগোচরে কিছুই ঘটে না। বিএসইসির চেয়ারম্যানের সাহস কতটুকু আছে, সেটাই বড় প্রশ্ন।