মূল্যবৃদ্ধির পর বাজারে ফিরল সয়াবিন তেল
নতুন করে বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১২ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দাম বাড়ানোর পরই বাজারে বেড়ে গেছে সয়াবিনের সরবরাহ। অথচ দাম বাড়ানোর আগে বাজারে সয়াবিনের সংকট ছিল। সেই সংকট শুক্রবার থেকে অনেকটাই কেটে গেছে। ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন দামের সয়াবিন তেল সরবরাহ করছেন পরিবেশকেরা।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে প্যাকেটজাত চিনির দামও বেড়েছে কেজিতে ১৩ টাকা। তাতে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সংকটও কাটতে শুরু করেছে। তবে খোলা চিনির সরবরাহ এখনো কম।
ঢাকার মগবাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ও কাঁঠালবাগান বাজার ঘুরে দেখা যায়, এ বাজারের দোকানে এখন নতুন দামের সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম রাখা হচ্ছে ১৯০ টাকা। আগে দাম সমন্বয়ের পর সয়াবিন তেল বাজারে আসতে কয়েক দিন সময় লাগত। কিন্তু এবার দাম বাড়ানোর পরপরই নতুন দামের তেল বাজারে চলে এসেছে বলে জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা।
মগবাজারের অবনি লাবণী স্টোরের বিক্রেতা মো. ফিরোজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে তেল চেয়েও পাচ্ছিলাম না। এখন তেল দেওয়ার জন্য পরিবেশকেরা সাধছে। দাম বাড়লে কোম্পানিগুলো এই কাজই করে। আবার কমলে উল্টো হয়।’
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে দেখা যেত, দাম সমন্বয়ের পরও কোম্পানিগুলোর হাতে আগের দামের কিছু পণ্য পাওয়া যেত। কিন্তু এবার দ্রুতই বাজারে চলে এসেছে নতুন দামের সয়াবিন তেল। তেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো আগে থেকেই বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল।
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী হৃদয় হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তেল ও চিনির সংকট থাকায় আমরা কোম্পানিগুলোকে বারবার বলেছি পণ্য দিতে। তখন তারা বলল, পণ্যের সংকট, কারখানায় উৎপাদন করতে পারছে না। এখন যেই দাম বাড়ল, তেলের চাহিদা নিতে দোকানে চলে এসেছে তারা। প্যাকেটজাত চিনিও দিয়ে গেছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি পরিশোধন কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সরকারকে বেশ আগেই দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সরকার সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেছে। দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে বাজারে সংকট দেখা দিত না। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো লোকসানে পণ্য বিক্রি করতে চাচ্ছিল না।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সম্মতি নিয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানার মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন তেলের নতুন দাম ঘোষণা করে গত বৃহস্পতিবার। পাশাপাশি চিনির দামও বাড়ানোর ঘোষণা দেয় চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানির মালিকদের সংগঠন। তাতে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা এবং চিনির দাম কেজিতে ১৩ টাকা বাড়ানো হয়। ফলে প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনির দাম দাঁড়ায় ১০৮ টাকা ও প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম ১৯০ টাকা।
এদিকে সরকার খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচির আওতায় যে আটা বিক্রি করে, তার দাম কেজিপ্রতি ৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ মূল্যবৃদ্ধি সংকটে থাকা মানুষের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেবে। কারণ, বাজারে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম ব্যাপক চড়া।