মাসিক করযোগ্য আয় ৭০ হাজার ৮৩৩ টাকায় আয়কর কমবে ৫ হাজার টাকা

যাঁদের করযোগ্য মাসিক আয় ৭০ হাজার ৮৩৩ টাকা, আগামী অর্থবছরে তাঁদের ওপর আয়কর ৫ হাজার টাকা কমবে। আর যাঁদের মাসিক করযোগ্য আয় ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা, তাঁদের ওপর থেকে করের ভার কমবে ১০ হাজার টাকা। আর যাঁদের করযোগ্য মাসিক আয় ৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকা, তাঁদের ওপর আগামী অর্থবছর থেকে বাড়তি ২২ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর দিতে হবে।

ব্যক্তিশ্রেণির আয়করের স্তর পুনর্বিন্যাসের ফলে মাসিক করযোগ্য আয়ের ভিত্তিতে করভার হ্রাস-বৃদ্ধির এ ঘটনা ঘটবে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল শুক্রবার বাজেট-উত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। আয়কর স্তর পুনর্বিন্যাসের ফলে কত আয়ের মানুষের ওপর বেশি প্রভাব পড়বে, আর কাদের আয়কর কমবে, তার একটি ছকও তৈরি করেছে সিপিডি। সংস্থাটি বলছে, প্রগতিশীল বা প্রগ্রেসিভ করব্যবস্থার (ধনীদের ওপর বেশি কর, গরিবের ওপর কম কর) উদ্যোগের ফলে যাঁদের করযোগ্য আয় কম, তাঁদের আয়কর কিছুটা কমবে। আর যাঁদের করযোগ্য আয় বেশি, তাঁদের কর বাড়বে। এ জন্য এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

সিপিডির হিসাবে, যাঁদের মাসিক করযোগ্য আয় ২৯ হাজার ১৬৭ টাকা ও ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, তাঁরা করস্তর পুনর্বিন্যাসের কোনো সুবিধা পাবেন না। ফলে আগামী অর্থবছরে তাঁদের আয়কর অপরিবর্তিত থাকবে। আয়কর সবচেয়ে বেশি বাড়বে যাঁদের মাসিক করযোগ্য আয় ৪০ লাখ টাকা, তাদের ওপর। নতুন করস্তর পুনর্বিন্যাসের ফলে এ শ্রেণির করদাতাদের বাড়তি ২১ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকা আয়কর দিতে হবে আগামী অর্থবছরে। চলতি অর্থবছরের চেয়ে আগামী অর্থবছরে তাঁদের আয়কর ১৮ শতাংশ বাড়বে।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করেছেন, তাতে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতার করমুক্ত আয়সীমায় কোনো পরিবর্তন করেননি। করমুক্ত আয়সীমা না বাড়লেও করস্তর কিছুটা পুনর্বিন্যাস ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে করের একটি নতুন স্তর করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, করমুক্ত আয়সীমার পরবর্তী ২০ লাখ টাকার বেশি আয় যাঁদের হবে, তাঁদের আগামী অর্থবছর থেকে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হবে। নতুন এ করস্তরের কারণে পুরো করস্তরটি কিছুটা পুনর্বিন্যাস করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, আগে করমুক্ত সীমার পরবর্তী আয় যাঁদের ৪ লাখ টাকার মধ্যে ছিল, তাঁদের ওই আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। আর যাঁদের করমুক্ত সীমার পরবর্তী আয় ৫ লাখ টাকার মধ্যে, তাঁদের আয়কর হার ২০ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

বাজেটে পুনর্বিন্যাস করা এই করস্তরের ভিত্তিতে সিপিডি হিসাব করে দেখিয়েছে, যাঁদের মাসিক করযোগ্য আয় সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২০ হাজার ৮৩৩ টাকার মধ্যে, তাঁদের আয়কর আগামী বছর কমবে।