বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে (প্রতি ডলারের দাম ১২০ টাকা) এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল (ক্রীড়নক), আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন।
গতকাল রোববার অর্থনীতি নিয়ে তৈরি শ্বেতপত্র প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি। ওই প্রতিবেদনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের টাকা পাচারের আনুমানিক এই চিত্র তুলে ধরা হয়। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি রিপোর্টস (জিএফআইআরএস) এবং কিছু নির্দিষ্ট পূর্বানুমানের ভিত্তিতে টাকা পাচারের হিসাব করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে অর্থ পাচার বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। টাকা পাচারের বিষয়টিকে অর্থনীতিতে ক্ষতিকর ‘টিউমার’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে অর্থনীতি ও সম্পদের বড় অংশ এই ক্ষতিকর টিউমার চুষে নেয়।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি মনে করে, প্রতিবছর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ৪ শতাংশের পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ও প্রবাস আয় থেকে যত অর্থ এসেছে, এর এক-পঞ্চমাংশ পরিমাণ অর্থ এক বছরে পাচার হয়। বিদেশি ঋণ ও বিনিয়োগ হিসেবে যত অর্থ আসে, এর দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ পাচার হয়।
টাকা পাচারের বিষয়টিকে অর্থনীতিতে ক্ষতিকর ‘টিউমার’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে এই প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে অর্থনীতি ও সম্পদের বড় অংশ এই ক্ষতিকর টিউমার চুষে নেয়।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রতিবেদন তুলে দেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্বেতপত্রে ব্যাংক খাত, শেয়ারবাজার, প্রকল্পের লুটপাট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিসংখ্যান ব্যবহারসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। সার্বিক অর্থনীতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জিডিপির প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে। এতে মধ্যম আয়েরদেশের ফাঁদে পড়ার শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। ৩৯৭ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে সব মিলিয়ে ২২টি ক্ষেত্রে আলোকপাত করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি ব্যয় (সরকারি বিনিয়োগ, এডিপি, ভর্তুকি ও ঋণ), ঘাটতি বাজেট অর্থায়ন, মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা, সরকারি কেনাকাটা ও খাদ্য বিতরণ, রপ্তানি, আমদানি, প্রবাসী আয়, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিদেশি অর্থায়ন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।
কোথায় কীভাবে টাকা পাচার হয়
দেশ থেকে কারা, কীভাবে, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে—সেই চিত্র তুলে ধরে শ্বেতপত্রে বলা হয়, টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে একধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে ওঠে। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি—এসব কর্মকাণ্ডের অর্থ পাচার করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।
অর্থ পাচার নিয়ে গবেষণা করে, এমন কিছু আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্ধৃতি দিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের ৫৩২টি বাড়ি বা সম্পদ আছে, যার মূল্য সাড়ে ৩৭ কোটি ডলার। ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৩ হাজার ৬০০ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কর্মসূচিতে মনোনীত হয়েছেন। ২০২৩ সালে ইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ থেকে ৮১৫ কোটি ডলার পাচার হয়।
টাকা পাচারের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার হিসাবে বেশ কিছু কারণের কথা বলেছে শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে। কারণগুলো হলো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা; প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি; আইনি দায়মুক্তি এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পরবর্তী ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কথাও বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ দেশে ঘুষ-দুর্নীতিসহ অন্যান্য অনৈতিক কর্মকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু অর্থ পরিশোধ হয়েছে বিদেশে। আগে ঘুষ-দুর্নীতির অর্থ দেশেই বিনিয়োগ হতো, একটি ছায়া অর্থনীতি সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছর ধরে দেশে টাকা রাখার পরিবর্তে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ নিরাপদ রাখার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দিয়ে নানা ধরনের সম্পদ কেনা হয়।
টাকা পাচারের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার হিসাবে বেশ কিছু কারণের কথা বলেছে শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে। কারণগুলো হলো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা; প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি; আইনি দায়মুক্তি এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পরবর্তী ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কথাও বলা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
আড়াই লাখ কোটি টাকা ঘুষ
সরকারি বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন পণ্য ও সেবা কেনা হয়েছে, তাতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকা। এই অর্থ সড়ক, সেতু, বিদ্যুৎ অবকাঠামো, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ ইত্যাদি খাতে ব্যয় হয়েছে। এ থেকে থেকে ঘুষ হিসেবেই দিতে হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি থেকে দুই লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার মতো। এ ঘুষ নিয়েছেন রাজনৈতিক নেতা, আমলা ও তাঁদের সহযোগীরা। শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে এ নিয়ে বলা হয়, ঘুষের টাকার মধ্যে ৭৭ হাজার থেকে ৯৮ হাজার কোটি টাকা গেছে আমলাদের কাছে। রাজনৈতিক নেতা ও তাঁদের সহযোগীদের কাছে গেছে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। আর ঠিকাদারেরা দেশে ও বিদেশে এ অর্থ পৌঁছে দিয়েছেন রাজনীতিবিদ ও আমলাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে। তাঁদের বড় অংশ থাকেন বিদেশে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক দখল
ব্যাংক খাতকে কৃষ্ণগহ্বরের (ব্ল্যাকহোল) সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাতে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে ১৩টি মেট্রোরেল বা ২২টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। গত দেড় দশকে রাষ্ট্রীয় সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক দখল করা হয়েছে। এরপর বড় অঙ্কের অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে ব্যাংক খাতে, যা এ খাতকে বিধ্বস্ত করে ফেলেছে।
গতকালের শ্বেতপত্র প্রতিবেদন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে। এসব ঋণের বড় অংশ ২০১৭ সালের পর দেওয়া হয়েছে।
শেয়ারবাজার থেকে আত্মসাৎ ১ লাখ কোটি টাকা
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রতারণা, কারসাজি, প্লেসমেন্ট শেয়ার ও আইপিওতে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১ লাখ কোটি বা ১ ট্রিলিয়ন টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রভাবশালী উদ্যোক্তা গোষ্ঠী, ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক ও বিনিয়োগকারীদের একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মাধ্যমে কারসাজির একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে। বাজারের মধ্যস্থতাকারী দেউলিয়া হয়েছে, তাদের ইক্যুইটি ৩০ হাজার কোটি টাকা নেতিবাচক।
যারা ব্যাংক খাতের অপরাধী, তারা শেয়ারবাজারে আস্থা নষ্ট করার পেছনেও ছিল বলে শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও যা আছে
প্রতিবেদন অনুসারে, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় পৌনে তিন লাখ কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পের খরচের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা লুটপাট করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং বাড়তি খরচ দেখিয়ে এই বিপুল অর্থ লুটপাট করেছেন বিদায়ী ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা ও সুবিধাভোগীরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি ও জিডিপির তথ্য–উপাত্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে। বিগত সরকারের আমলে বিবিএসের পরিসংখ্যানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয়েছে বলে মনে করেন শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে জিডিপির প্রায় ৬ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ করছাড় দেওয়া হয়েছে।
সমস্যাটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম, তার চেয়েও গভীর। এই ৩০ অধ্যায়ের প্রায় ৪০০ পৃষ্ঠার দীর্ঘ শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে কীভাবে পুঁজিবাদ অলিগার্কদের জন্ম হয়েছে, কীভাবে তারা নীতি প্রণয়ন নিয়ন্ত্রণ করেছে।দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
অলিগার্ক যেভাবে জন্ম নিয়েছে
প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন জমা অনুষ্ঠানে কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানান, সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই কমিটি স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘সমস্যাটি আমরা যতটা ভেবেছিলাম, তার চেয়েও গভীর। এই ৩০ অধ্যায়ের প্রায় ৪০০ পৃষ্ঠার দীর্ঘ শ্বেতপত্রে উঠে এসেছে কীভাবে পুঁজিবাদ অলিগার্কদের জন্ম হয়েছে, কীভাবে তারা নীতি প্রণয়ন নিয়ন্ত্রণ করেছে।’
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন এ সময় বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে উন্নয়নের নামে বিভিন্ন ‘ভ্যানিটি প্রকল্প’ অগ্রাধিকার পেয়েছে। ওই সময়ের অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি লন্ডভন্ড অর্থনীতি পেয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর এই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আত্মতুষ্টি তৎকালীন নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছিল। তখন সমস্যার স্বীকৃতি মেলেনি। আমাদের নিয়মনীতি এবং বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় সংগঠনগুলো তছনছ হয়ে গেছে। দুর্নীতির দুষ্টচক্র সব স্তরে ঘিরে বসেছে।’
বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়টি তুলে ধরে জাহিদ হোসেন বলেন, সাবেক সরকারের সুবিধাভোগী নেতা–নেত্রীরা, অলিগার্কের সহযোগিতায় অসাধু পথে অর্জিত বিশাল পুঁজি বিদেশে জমিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পরিসংখ্যানকে রাজনৈতিক প্রচারের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জাহিদ হোসেন।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ আগস্ট বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। অন্য সদস্যরা হলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম আরিফা সিদ্দিকী।