রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে একনেক সভায় ৮,৪৮২ কোটি টাকার দুটি প্রকল্প অনুমোদন
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্নিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেক সভায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে ৮ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন। সভায় তিনি সভাপতিত্ব করেন।
একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুস সালাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সামনে যেহেতু বর্ষার মৌসুম, তাই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত করতে হবে।’ তিনি জানান, পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়াতে না পারে, সে জন্য ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে রাতভর ঘূর্ণিঝড় পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।’
এদিকে একনেক সভায় রোহিঙ্গাদের উন্নয়নে ৮ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অবকাঠামো উন্নয়নে ৪ হাজার ৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া একটি প্রকল্প এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে ৪ হাজার ৪০১ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া অন্য আরেকটি প্রকল্প।
সত্যজিত কর্মকার বলেন, এই দুই প্রকল্প প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী প্রজেক্ট প্ল্যানিং সিস্টেম (পিপিএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনুমোদন করেছেন, যা পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে। প্রধানমন্ত্রী এই দুই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্ভাবন মানসিকতা প্রদর্শন এবং আন্তরিকভাবে কাজ করতে বলেছেন।প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।’
পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার জানান, গতকালের একনেক সভায় মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৩৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা, বৈদেশিক ঋণ সহায়তা থেকে ৭ হাজার ৮৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৮৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
একনেকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কর্ণফুলী নদী এবং সংযুক্ত খালগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধকল্পে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ৪৮ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন চালের আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণ প্রকল্প। রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিসির জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি স্লিপওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা এবং বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী-রামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনের সড়কে উন্নয়ন প্রকল্প এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এ পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প।