সিলেটে গ্যাস কূপ খননের কাজ পেল চীনা প্রতিষ্ঠান

গ্যাসের কূপফাইল ছবি

সিলেটে একটি উন্নয়ন কূপ ও একটি অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ পেয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোপ্যাক ইন্টারন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম সার্ভিস করপোরেশন। কাজটির আনুষ্ঠানিক নাম ‘সিলেট-১১ (উন্নয়ন কূপ) ও রশিদপুর-১৩ (অনুসন্ধান কূপ) খনন কার্যক্রম’।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে আজ বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ–বিষয়ক প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, কূপ খনন কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ জানায় সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড। এরপর চীনের সিনোপ্যাক ইন্টারন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম সার্ভিস করপোরেশন কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিল করে। সব প্রক্রিয়া শেষে দরপ্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দর-কষাকষি এবং চুক্তিও করেছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের উপস্থাপন করা এ প্রকল্প প্রস্তাব বাস্তবায়নে ৪৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা খরচ হবে।

জানা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। কূপ দুটির খনন সফলভাবে শেষ হলে প্রথম পাঁচ বছর দৈনিক দুই কোটি ঘনফুট এবং পরের পাঁচ বছর দৈনিক ১ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। ১০ বছরে যে পরিমাণ গ্যাস তোলা যাবে, তার মূল্য হবে প্রায় ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধির (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ অনুসরণে সিলেট-১১ (উন্নয়ন কূপ) ও রশিদপুর-১৩ নম্বর কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন করা হবে বলে জানা গেছে।

কূপ খননে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানিও কাজ করছে। এসব বিদেশি কোম্পানির মধ্যে আছে বহুজাতিক কোম্পানি রাশিয়ার গাজপ্রম ও চীনের সিনোপ্যাক। এ ছাড়া উজবেকিস্তানের বহুজাতিক কোম্পানি অ্যারিয়েল করপোরেশনের সাতটি কূপ খননের কথা রয়েছে। চীনের কোম্পানি সিনোপ্যাক পেট্রোলিয়াম করপোরেশন পাঁচটি কূপ খননের কাজ পাওয়ার কথা। সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপ খননের কাজ ইতিমধ্যেই করছে সিনোপ্যাক।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারেট এনার্জি থেকে প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩ দশমিক ৫৫ মার্কিন ডলার দরে ৬০৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি।

ক্রয় কমিটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপস্থাপন করা ২২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ের বিআরটি-গাজীপুর-এয়ারপোর্ট রোডে মেটাল ফেনসিং প্রকল্পের একটি প্রস্তাবও অনুমোদন দেয়। তবে কমিটি ফেরত দেয় ২৭১ কোটি ব্যয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনের উৎসমুখে এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব।

সৌদি আরব থেকে ৫২৩ মার্কিন ডলার দরে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার ও রাশিয়া থেকে ২৭৫ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার দরে ৩০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির দুটি প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে অনুমোদিত হয়। এতে ব্যয় হবে ৩৪৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

রাজধানীর গাবতলীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের (ক্লিনার) জন্য বহুতলবিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আলাদা চারটি প্যাকেজে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা।