সামাজিক সুরক্ষা খাতে কার ভাতা কত বাড়ছে
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার দেশের গরিব বয়স্ক নারী-পুরুষ, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তি কিছুটা বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি উপকারভোগীর সংখ্যাও কিছুটা বাড়বে আগামী বছরে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পেশ করা আগামী অর্থবছরের বাজেটে এই প্রস্তাব রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী অর্থবছরের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমকে যৌক্তিকভাবে সাজিয়েছি। এর মধ্যে সামাজিক সুরক্ষা খাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপকারভোগীর সংখ্যা এবং ভাতার হার পরিবর্তন করা হয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম খাতে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। প্রস্তাবিত এই বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
যাদের ভাতা বাড়ছে
নতুন অর্থবছরে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি সংসদে জানান, সরকার আগামী অর্থবছরে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ বাড়িয়ে ৫৮ লাখ ১ হাজার জন করবে। এ ছাড়া মাসিক ভাতার হার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হবে।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাভোগীর সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে এই শ্রেণির ভাতাভোগী রয়েছেন ২৪ লাখ ৭৫ হাজার জন। আগামী অর্থবছরে তা ১ লাখ বাড়িয়ে ২৫ লাখ ৭৫ জনে উন্নীত করা হবে। তাঁদের মাসিক ভাতার হার ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে সরকারের প্রতিবন্ধী ডেটাবেজের আওতাভুক্ত সবাইকে ভাতার আওতায় আনা হচ্ছে। ফলে এই শ্রেণিতে মোট ভাতাভোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২৯ লাখ। এতে গত অর্থবছরের তুলনায় প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়বে প্রায় ৫ লাখ ৩৫ হাজার।
প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তির হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই হার প্রাথমিক স্তরে ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৮০০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা করার প্রস্তাব রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।
প্রস্তাবিত বাজেটে হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৮১৫ থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার ৮৮০ জন করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৬২০ জন করা হয়েছে।
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৯ হাজার ৫৭৩ থেকে বাড়িয়ে ৮২ হাজার ৫০৩ জন করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এই শ্রেণিতে বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৫০ থেকে বাড়িয়ে ৫৪ হাজার ৩০০ জন করা হয়েছে। এ ছাড়া এই শ্রেণিতে উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ হাজার ৯০৩ থেকে বাড়িয়ে ২৬ হাজার ২৮৩ জন করা হয়েছে।
মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ লাখ ৫৪ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৩ লাখ ৪ হাজার করা হয়েছে। এ ছাড়া অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কার্যক্রমে উপকারভোগীর দৈনিক ভাতার হার ২০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করতে চান অর্থমন্ত্রী।